গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি:সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা জাফলং জিরো পয়েন্ট সিঁড়িরঘাট ও সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে দেদারসে আসছে ভারতীয় অবৈধ পণ্য সামগ্রী বাংলাদেশ, ভারতীয় চোরাকারবারীদের কাছ থেকে জেলা ডিবি ও থানা পুলিশের নামে চাঁদাবাজি অভিযোগ রয়েছে লাইনম্যান সামছুল ও মান্নান মেম্বার সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে। লাইনম্যান সামছুল এক সময় ছিল থানা পুলিশের সোর্স। দীর্ঘদিন সোর্স হিসেবে কাজ করে সীমান্তের এক স্মাগলার জনৈক মহিলার সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে নিজেই জড়িয়ে পড়ে চোরাচালান ব্যবসার। পুলিশের সাথে সম্পর্ক থাকায় সেই সুযোগে হয়ে যায় পুলিশের লাইনম্যান। শেষমেশ সামছুল সীমান্তের স্মাগলার ঐ মহিলাকে বিয়ে কর্ েচোরাচালানের লাইন পাকাপোক্ত করে নেয়। বিগত সরকারের শাসন আমলে সামছুল ছিলো ব্যাপরোয়া কারণ, তার পরিবারের সকলেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত। কারণ তার বড় ভাই ও মামা ছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় নেতা। তাই তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পর্যন্ত পায়নি। থানা পুলিশ ছিলো তার কাছে অসহায়। চোরাকারবারি সামছুলের বিরুদ্ধে রয়েছে নাশকতার দুটি মামলা। এসব মামলায় পুলিশের খাতা সে পালাতক। কিন্তু রাত হলেই থানার ওসির সাথে বৈঠকে বসে সামছুল, মান্নানসহ চোরাকারবারিরা।
এদিকে সামছুলের মতো আরেক ক্ষমতারধর চোরাকারবারী হলো ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মান্নান। সীমান্ত এলাকার গুচ্ছগ্রামে বাড়ি হওয়ায় সে নিজেই জড়িয়ে পড়েছে চোরাকারবারে। এখন চোরাচালান ব্যবসার পাশাপাশি নিজেই জেলা ডিবি ও থানা পুলিশের লাইনম্যান হয়ে উঠেছেন। মান্নান মেম্বার প্রায়ই হুমকিদেন আমি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, তাই আমাকে পুলিশ লাইন না দিয়ে কিছু করার নেই। মান্নান জনপ্রতিনিধি হয়ে নিজেই চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করতে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট, তার দলে রয়েছেন প্রায় ৩০ জনের মতো সদস্য।
এদিকে সীমান্তের চোরাচালান প্রতিরোধে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজির মিটিং এরপর বিভাগীয় কমিশনার সম্প্রতি মিটিংয়ে বসেন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ। সেখানে সীমান্তের চোরাচালান প্রতিরোধে নেওয়া হয় জরুরি নানা রকম সিদ্ধান্ত। ঐদিন রাতেই চোরাকারবারিদের নিয়ে থানায় বৈঠকে বসেন থানার ওসি সরকার তোফায়েল। রাত ৩টা পর্যন্ত চলে থানার ওসির সাথে চোরাকারবারিদের বৈঠক। সেখানে উপস্তিত ছিলেন স্থানীয় বিএনপির কিছু বির্তকৃত নেতা। মাসিক না কমিশন নিয়ে কোন সিদ্ধান্তের পৌঁছাতে না পারায় সামছুল ও মান্নানের কাছেই রয়ে যায় চোরাচালানের লাইন।
এদিকে চোরাচালান বন্ধ করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বৈঠক আর থানায় ওসির নেতৃত্বে বসছে চোরাকারবারিদের বৈঠক। তাহলে কিভাবে সীমান্তের চোরাচালান বন্ধ হবে ? সেই প্রশ্ন সচেতন মহলের মাঝে।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের বিট অফিসার জহুর লাল এর ব্যবহৃত মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি এলাকায় নতুন এেেসছি, এখানে কাউকে তেমন চিনিনা। চোরাচালান বন্ধ করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। সামছুল ও মান্নান মেম্বার সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দেখবো। কেউ পুলিশের নামে চাঁদাবাজি করলে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে আরেকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে সামছুল ও মান্নানের সাথে মামার দোকানে বসছেন জহুর লাল। কিন্তু সেনাবাহিনীর টহল জোরদার থাকায় তেমন একটা সুযোগ করতে পারছেন না চোরাকারবারিরা।
এদিকে সীমান্তের একাধিক চোরাকারবারীর সাথে পরিচয় গোপন করে, আলাপকালে তারা জানান, স্থানীয় বিট অফিসার জহুর লালকে ম্যানেজ করে সময় সুযোগ-বুঝে আমরা ভারতীয় চিনিসহ পন্য নিয়ে আসছি। পুলিশের চাঁদার পরিমান বেড়ে যাওয়ায় লাভটা একটু কম হচ্ছে। পুলিশ ও জেলা ডিবি ওসি (উত্তর) এর লাইনের টাকা মান্নান মেম্বার ও সামছুল নিচ্ছেন।