
আজ ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের এক সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন বলেছেন, আমাদের সকল প্রয়াস ও উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের আগামীদিনের বংশধরদের জন্য একটি আধুনিক স্বাস্থ্যময়, সুন্দর, সুশৃংখল গ্র চট্টগ্রাম গড়ে তোলা। চট্টগ্রামের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্ব কি তা বলার অপেক্ষা রাখে না । কিন্তু নগরীর জলাবদ্ধতা, দীর্ঘদিনের আকাঙ্খিত ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বার বার প্রতিশ্রম্নত কালুরঘাটে নতুন সেতু আজও বাস্তবায়িত না হওয়ার কারণে বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীর সেই স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে গুড়িয়ে দিচ্ছে আর করছে হতাশাগ্রস্থ। জনপ্রতিনিধিদের এই ব্যাপারগুলি নিয়ে কতটুকু মাথাব্যথা আছে তা জনগণ বুঝতে পারছেন না। চট্টগ্রাম মহানগরকে সার্বিকভাবে উন্নত করতে জনগণের কোনো অংশগ্রহণ নেই, আর নেই জনগণকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সচেতন করার কোনো কর্মকান্ড। এটা বর্তমান সরকার তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। অথচ চট্টগ্রামের জন্য রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনেক আন্তরিকতা এবং কর্ণফুলীর নিচে টানেল ও কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ এর প্রমান । আজ আমরা নগরীর জলাবদ্ধতা ও কালুরঘাটে নতুন সেতু বাস্তবায়ন এই দুই বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জরুরি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, কারণ এসব সমাধান না হলে বাকি সব অর্জন মানুষের কাছে অর্থহীন হয়ে পড়বে।
আজ চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন যত এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘ প্রতিশ্রম্নত, কর্ণফুলীর কালুরঘাটে নতুন সেতু অবিলম্বে বাস্তবায়নের আহবান নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন তাঁর লিখিত বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
ফোরামের মহাসচিব মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এডভোকেট আবুল হাশেম, যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হোসেন। এতে অন্নান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক কামরুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা আবুল হাশেম রাজু এডভোকেট আসাদুজ্জামান, আমিরুল ইসলাম, তসলিম খাঁ, গোলাম রসুল মান্নান, মো: তসলিম রিদয়, এডভোকেট রাসেল প্রমুখ।
ব্যারিস্টার মনোয়ার আরো বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতার স্স্থায়ী নিরসনে একসাথে কাজ না করে এ বিষয়ে সিডিএ ও সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সমন্বয়ের চরম অভাব ও পরস্পরকে সরাসরি দোষারোপ করতে দেখা গেছে বিগত অনেক দিন ধরে । এ বিষয়ে সিটি মেয়রের সাহসী ও উদ্যোগী ভূমিকা নেয়ার উপর গুরুত্ব দেন। তিনি আগামী বছরের মধ্যে জলাবদ্ধতার মেগা প্রকল্পের বাদবাকি কাজ গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেকোনো মূল্যে সমাপ্ত করতে আহ্বান জানান। এই সাথে প্রকল্পটির একটা পর্যালোচনা হওয়া উচিত এবং এতে নতুন বিকল্প খাল গুলি করার ব্যাপারে যেখান যেখানে প্রয়োজন সেগুলো করার উদ্যোগ নিতে হবে। আর দুই বছর পরে যেন দেখতে না হয় সমস্যা আগের মতোই রয়ে গেছে কিন্তু অর্থগুলি সম্পূর্ণ ঠিকই খরচ হয়ে গেছে।আর এই সাথে কর্ণফুলির নিয়মিত ড্রেজিং অবশ্যই জরুরী।
নতুন কালুরঘাট সেতুর বারবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রম্নতি এখনো পূরণ না হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে আর কোথাও ঘটেনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সব অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে। যেখানেই তিনি যা প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন সবই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং কতৃপক্ষের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে। দুর্ভাগ্য বশত আজ পর্যন্ত এক যুগ আগে প্রতিশ্রম্নত কালুরঘাট নতুন সেতুর কাজ শুরু না হওয়ায় চট্টগ্রামবাসী নিজেদেরকে অতীতের সরকারগুলোর আমলের মতো অবহেলিত ও ভাগ্যবিড়ম্বিত মনে করছেন। এ বিষয়ে জরুরি ঘোষণা না দিলে আগামী সংসদ নির্বাচনের সময় এটি একটি কঠিন ইস্যু হয়ে দাঁড়াতে পারে। ব্যারিস্টার মনোয়ার প্রশ্ন করেন — আগামী নির্বাচনে চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট আসন গুলোতে সরকার দলীয় প্রার্থীরা জনগণের কাছে কিভাবে ভোট চাইবেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এক যুগ আগে আপনারই প্রতিশ্রুত কালুরঘাট নতুন সেতুর সুস্পষ্ট ঘোষণা দিন যাতে করে জনগণ দলমত নির্বিশেষে আপনার মনোনীত প্রার্থীকেই ভোট দেবেন । তিনি এসব বিষয় বিষয় বিবেচনায় নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে প্রকল্প মন্ত্রী সভায় এবং একনেকে পাস করিয়ে নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরুর তারিখ ঘোষনার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়া বক্তারা বর্তমানে পুরাতন কালুরঘাট সেতু মেরামতের সময়কালে যাতায়াতের জন্য ফেরী ব্যবস্থাকে অপর্যাপ্ত এবং অব্যবস্থাপনার ভরা বলে উল্লেখ করেন। তাঁরা জনসাধারণের এতে অবর্ণনীয় কষ্ট হচ্ছে বলে জানান এবং ২৪ ঘন্টা ফেরী চালু রাখতে দাবী জানান।