
মো: নজরুল ইসলাম
জলবায়ু পরিবর্তন:
চৈত্র্যের চৈতা খড়া,পাট পাতার শাক ভাত,কালো মেঘের ঘনঘটা শিতল বাতাস! বিভিন্ন ঋুুতুর বর্ননা দিতে গিয়ে গ্রাম বাংলার যেসব প্রবাদবাক্য ব্যবহার করা হয় তারই একটি এই বচন। আর্থাৎ চৈত্র্যের খড়ায় মাঝে মাঝে শীতল বাতাস শুরু হয় যাতে করে গায়ে সেই অনুভুতির সারা পরে।
আমাদের ছোটবেলায় আমরা সেই অনুভুতি কিছুটা পেয়েছি। ষড়ঋতুর বাংলাদেশের ঐতিহ্য নেই বললেই চলে, বড়জোড় তিন ঋতুই দৃশ্যমান। বেড়েছে শীত গরমের তীব্রতা ,আসময়ে বৃষ্টিপাত । জলবায়ুর এ ধরনের ছন্দপতন যখন সাধারন ঘটনা হযে দাড়ায় তখন্ধসঢ়; তাকে সাধারনভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের সংঞ্জাভুক্ত করা হয়।তবে জলবায়ু পরিবর্তনের সামগ্রীক প্রভাব এই সংজ্ঞার আওতা ছাড়িয়ে বহুদুর বিস্তৃত ও গভির। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের জীবন যাপনের পরিবর্তন ঘটে। পরিবর্তন ঘটে শস্য চক্রের ,আবির্ভাব ঘটে নতুন নতুন রোগ বালাইয়ের । এই পরিবর্তনগুলো ইতেমধ্যে আমরা নানাভাবে দেখছি। জলবায়ু পরিবর্তনের সুদুরপ্রসারি প্রভাব ভূউপরিভাগ বেষ্টিত মধ্যাঞ্চলগুলোর প্রায় পুরটাই মরুভূমিতে রুপান্তর হতে পারে এবং একটা বিরাট অংশ তলিয়ে যেতে পারে সমুদ্রের তলদেশে। সুপেয় পানির অভাব হয়ে উঠতে পারে প্রকটতর, সৃষ্টি হতে পারে জলবায়ু উদ্বাস্তুতা, বাড়তে পারে সামাজিক রাজনৈতিক সংঘাত, বায়ুবাহিত জীবানুই হতে পারে প্রাণঘাতি ভাইরাস, শুরু হতে পারে
প্রাকৃতিক মহামারি, আধিপাত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদী দখল উপনিবেশিকরনের নতুন পর্ব , এমনকি ধ্বংস হতে পারে গোটা দুনিয়ার এতদিনের সভ্যতা। এ যেন সিনেমার মত প্রতিটি কাল্পনিক সম্ভাবনাই বাস্তব হুমকি হিসেবে সামনে আসা। আসলেই তাই জলবায়ু পরিবর্তন তথা বৈশ্বিক উষ্মায়ানের মোকাবেলা না করতে পারলে পৃথীবির মানুষের জন্য এক নিদারুন কষ্টের সময় অপেক্ষা করছে।
প্রতিটি আশংকাই বাস্তব এবং বর্তমান গতিতে কৃত্রিম উন্নয়ন ও পরিবেশের ধ্বংসযঞ্জ চলতে থাকলে পরিনতিটি আর সম্ভাবনা না হয়ে বাস্তবে রুপ নিতে বাধ্য। সেই পরিনতি হবে কি না তা নির্ভর করে বর্তমানে আমরা কি পদক্ষেপ নিচ্ছি তার উপর। আর এই পদক্ষেপও নির্ভও করে বিষয়টি আমরা কিভাবে দেখছি, এই প্রতিকুল পরিস্থির মোকাবেলায় আমরা কতদুর যেতে প্রস্তুত আছি এবং বিদ্যমান ক্ষমতা বিন্যাসের কি বদল ঘটছে সেগুলোর উপর।
জলবায়ু পরিবর্তন প্রাকৃতিক না সামাজিক ?:
জলবায়ু পরিবর্তন কি মানুষের কাজ কর্মের ফলাফল না প্রকৃতির সাধারন নিয়মেরই অংশ এই প্রশ্ন নিয়ে বহুদিন যাবৎ তর্ক চলছে বিজ্ঞানিদের ভেতরেও বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্টের রক্ষণশীল পক্ষ হতে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঘনঘটা প্রকৃতির
সাধারন পরিবর্তনের ফলাফল হিসেবে চালিয়ে দেবার চেষ্ট ছিল লক্ষণীয়। সারা দুনিয়ার বহু পরিবেশ বিজ্ঞানি আন্দেলনের কর্মী, এনজিও কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর আইপিসিসি ২০০৭ সালে বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনকে মনুষ্যসৃষ্ট হিসেবে ঘোষনা করে । অর্থাৎ জলবায়ুর যে পরিবর্তন বর্তমানে ঘটছে সেটি স্বাভাবিক প্রকুতিক পরিবর্তনের আরম্ভ ফল নয় বরং এক ধরনের বিকৃত অমানবিক পরিবর্তন। এই বিকৃতি একটি সমাজের আর্থসামাজিক,রাজনৈতিক,সাংস্কৃতিক ব্যবস্থাপনারই অংশ। মানুষে -মানুষে এবং মানুষে- প্রকৃতিতে যে সম্পর্ক জারি আছে দুনিয়াজুরে তারই অনিবার্য্য ফলাফল হলো এই পরিবর্তন।জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে প্রতিনিয়তই। পরিবর্তনই প্রকৃতির নিয়ম অপরিবর্তন নয়। কিন্তু সেই পরিবর্তনের দিক ও গতিকে এমনভাবে প্রভাবিত করা হচ্ছে যাতে সেটি এক মারাত্বক বিপদের মুখোমুখি করেছে আমাদের। আগে যে পরিবর্তন হতে সময লাগত হাজার বছর এখন সেটি লাগে ১০০ বছর আগে ১০০ বছরে যে পরিবর্তন হত এখন সেটি লাগে ১০ বছর আগে ১০ বছরে যে পরিবর্তন হতো এখন সেটি লাগে ১ বছর ।
প্রকৃতির এই দ্রুত গতির পরিবর্তনের ফলে সমগ্র প্রাণ-প্রকৃতি ও প্রতিবেশে চরম হুমকির মুখে। পরিবেশের বিপর্যয় পুজির প্রাণভোমরা: আজ আমরা এমন এক যুগে বাস করছি যখন পুরোনো কালের সুর্য্য ওাার আগেই ঘুম হতে উঠা আর সন্ধা নেমে এলেই ঘুমাতে যাওয়া প্রায় রুপ কথার গল্পের মতই শোনায় । অথচ মানবজাতি তার ইতিহাসের অধিকাংশই পার করেছে এভাবে।শিকার কিংবা আহরনের কালে তো বটেই কৃষিভিত্তিক উৎপাদনের কালেউ । সেই তুলনায় শিল্পভিত্তিক যুগ অনেকটাই নবিন। কিন্তু এই শিল্প ভিত্তিক নগরায়ন মুলত যা জীবশ্ম জ্বালনি নির্ভর তা অনেক বেশি নাটকীয়। এর সাথে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে পুঁজির। পুঁজির বিকাশ সর্বদায় অস্থির, নিজের সংবর্ধনই যার প্রধান শর্ত। নিজের স্ফীতি ও উন্নয়ন ছারা সে কিছুই বুঝে না,পুঁজি হিসেবে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না।পুজিকে প্রতিনিয়ত উদ্বিত্ত্ব উৎৎপাদন করতে হয়।এবং সেই উদ্বিত্ত্বকে পুনরায বিনিয়োগ করতে হয়। যা আবার শেষ পর্যন্ত আরো উদ্বিত্ত্ব নিযে আরো শক্তিশালী হয়ে আসবে। এরপর আরো বিনিয়োগ আরো উদ্বিত্ত্ব এভাবে চক্রাকার প্রক্রিয়ায় চলতে থাকে যাতে করে উদ্বিত্ত্ব উৎপাদন আরো বৃদ্ব্যি পায়। এই মুনাফার জন্য সে এতই মরিয়া যে প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশের বিপর্যয় ও মহামারি মত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হলেও সেখান থেকে মানবিক না হয়ে বরং কিভাবে আরো মুনাফা লাভ করা যায় তার জন্য সে মরিয়া থাকে সর্বদায়। এই ধরনের বাধ্যবাধকতা তার উপর যে চাপ সৃষ্টি করে তা একদিকে শ্রমের কার্যকরিতাকে বৃদ্বির প্রয়োজন সৃষ্টি করে,যাতে করে আপেক্ষিকভাবে কম মুল্যে অধিক শ্রম ব্যাবহার করা যায়। ফলে শ্রম সময়ের দৈর্ঘ্য বৃদ্বি ও তার অভিনব অতিশয় প্রয়োজনীয় হয়ে দাড়ায়। অন্যদিকে তাগিদ সৃস্টি করে উৎপাদন এলাকার বাজারকে ছাড়িয়ে আরো বিস্তৃতি ঘটানো। পরিবেশের ইতিবাচক নিয়ম নীতি না মেনেই এবং জীবশ্ম জ¦ালানির ব্যবহার কৃদ্ব্যির মাধ্যমে কার্বন নি:সরনকে আরো ধুমায়িত করছে। প্রকৃতির সাথে এই ধরনের নানামূখীন অনিয়মের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য অনেক আগেই নস্ট হয়েছে এখ পরিবেশ বিপর্যয় থেকে সৃষ্টি হয়েছে প্রাণঘাতি মহামারি। পূঁিজবাদই যার নাম দিয়েছে (কভেট-১৯ করোনা ভাইরাস), সারা দুনিয়া আজ আক্রান্ত। সহসাই এই ভাইরাস থেকে পরিত্রান মিলছে না। টাল মাতাল হয়েছে ধনীক দেশগুলো সহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর নব্য পূঁজিপতিরা।পরিবেশের বিপর্যয় ও জ¦ালানি সংকটের কারন এমন হতে পারে- প্রথমত শক্তির উৎসের সাথে উৎপাদন এলাকার সরাসরি সম্পর্ক গেল ঘুছে। ফলে প্রাকৃতিক প্রক্রিযার সাথে সম্পর্ক ছাড়াই উৎপাদনকে বিশেষ অঞ্চলে কেন্দ্রীভুত করা সম্ভব হলো।২য়ত জীবাশ্ম জ্বালানি যেহেতু ধরে রেখে যেকোন সময় ব্যবহার করা যায় ,ফলে দিন রাত –শীত গ্রীস্ম ইত্যাদি প্রাকৃতিক বাধা হতে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে বিছ্ধিসঢ়;ছন্ন করা সম্বব হলো । ফলে শ্রম সময় ও পরিসর উভয়কেই ঘনিভুত করে শ্রম শোষনের মাত্রাা বাড়িয়ে দেয়ার সুযোগ হলো অবারিত। তৃীতিয়ত জীবাশ্ম জ্বালানিকে সহজেই অন্য রুপে রুপান্তরের সুযোগ থাকায় বিশেষত গ্যাসোলিন বা বিদ্যুতে রুপান্তরিত করতে পারার কারনে জ্বালানির পরিমান সম্পর্কে রক্ষণশীল হিসাব নিকাশের আর কোন প্রয়োজন রইল না। নগরকে সারারাত আলোকিত করে রাখা যেমন পেট্রোল ডিজেল চালিত গাড়ির ক্রমাগত বৃদ্ব্যি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ক্রমাগত গতি সঞ্চার,আর সমাজ জীবনে অদৃষ্টপুর্ব ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা প্রতিষ্ঠার মধ্যে উৎপাদন ও ভোগের যে অলংঘনীয়তা শুাং হলো তা সম্ভব হয়েছে জীবশ্ম জ্বালানির কারনেই । আর এই পুরো প্রক্রিযার ভেতর দিয়েই প্রধান শিকারে পরিনত হলো প্রাণ-প্রকৃতি।
উৎপাদন এলাকা ও শক্তির উৎসের বিচ্ছিন্নতা যে নগরাযন সম্ভব করে তুলল তার ফলে নগর ও গ্রামের ভেতর তৈরী হলো অনতিক্রম ব্যবধান। নগরকে খাওয়ানের দায়িত্ব পরলো গ্রামের মানুষের। এর ফলে বাড়তি চাহিদা পুরনের জন্য গ্রামের কৃষি কাজে
আসল হাইব্রিড,কীটনাশক ও রাসায়নিক পরিবর্তন।ফলে কৃষি কাজে মাটির যে পুুষ্টি শহরে আসে তা আর কখনোই মাটিতে ফিরে যায় না। ফলে মাটি ধিরে ধিরে উর্বরতা হারায় । এর সাথে বর্তমান কৃষির যে রুপান্তর হয়েছে তাকে যোগ করলে দেখা যাবে তা শুধু মাটির উর্বরতই ধ্বংসকরছে না দুষিত করেছে নি:শেষ করছে সুপেয় পানি। অসম্ভব করে তুলেছে স্থলজ ও জলজ প্রানের বেঁচে থাকা । কৃষিতে বাড়ছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যাবহার ও কার্বন নি:সরন।
শিল্প উৎপাদনের প্রত্যেকটি স্তরেই ব্যবহুত হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানি এবং পুঁিজর আত্মবিকাশ বা মুনাফার অপরির্হায্যতার প্রয়োজনে। এর ফলে যে দুষন হয় যতদুর জানা যায় এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে নারাজ পুজিপতিরা। যা গোটা দুনিয়াকে বায়ুবাহিত রোগসহ ভয়াবহ দুষনের মুখোমুখি করেছে। আজকে আমরা সেটি প্রত্যক্ষ করছি সারা দুনিয়ার অসুস্থতা দেখে। অন্যদিকে পুঁিজবাদি অর্থব্যবস্থায় জীবন যাপন দাড়িয়ে আছে উচ্চমাত্রার গতিশীলতার উপর। যে গতিশীলতা বজায় রাখতে প্রতিদিন পুড়ানো হচ্ছে টনকে টন জ্বালানি। ক্রমাগত প্রাকৃতিক পরিবেশকে প্রতিস্থাপিত করা হচ্ছে কৃত্রিমভাবে তৈরী করা পরিবেশের ওপর।
পুঁিজর পরিবর্ধন যেমন প্রায় পুরোটাই নির্ভশীল জীবাশ্ব জ্বালানির উপর,বীপরিতে প্রাণের অস্তিত্ত্বও প্রায় পুরোটাই নির্ভশীল সৌরশক্তির উপর । চক্রাকার ঘুরে ঘুরে আসা যেমন পুজির প্রাক্রিয়া প্রকৃতির তেমনটি নয়,বস্তু ও শক্তির প্রাকৃতিক রুপান্তর এবং উদ্বিদ ও প্রাণীর মত জীবন্ত জিনিসের প্রাকৃতিক বিকাশের প্রাক্রিয় মোটেই পুনারাবৃত্তিমুলক নয়। পুঁজিবাদি ব্যবস্থায় জীবশ্ম জ্বালানির সীমিত মজুদের উপর নির্ভরশীল । প্রথমত: এগুলো ফুরিয়ে যাবে, ২য়ত তার ব্যবহার এত বিপুল পরিমানে ক্ষতিকর কার্বন নি:সরন ঘটাচ্ছে যাতে করে পৃথিবীতে বেচে থাকার পরিস্থিতি দিনে দিনে ধ্বংস প্রাপ্ত হচ্ছে। গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়া,ওজন স্তরের ক্ষয়, প্রাণবৈচিত্র ধ্বংস,মরুকরন, বন উজার হওয়া, সুপেয় পানি অপ্রতুল্য হয়ে উহার মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের মুল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে আমাদের।বিশ্ব বাজারে জ্বালানির চাহিদা ও দাম যেমন বেড়েই চলেছে তেমনি কমেও আসছে এর মজুদ। বিশ্বের তেল উৎপাদনকারি দেশগুলোর মজুদও কমে আসছে তেমনি তা আর্থিক ও প্রতিবেশগত দিক হতে হয়ে উঠেছে ব্যয় বহুল। অন্যদিকে জ্বালানির পরিমান যতই কমে আসছে তার উপর দখলদারিত্যের প্রতিষ্ঠার লড়াই হচ্ছে তীব্র।দুনিয়ার জ্বালানি সম্পদের পুরোটাই এখন বড় বড় বহুজাতিক কম্পানির নিয়ন্ত্রনে।
এই নিয়ন্ত্রনের অর্থ হলো –
১. জ্বলানির ক্ষেত্রগুলোর উপর কৌশলগত নিয়ন্ত্রন
২.সরবারহের কাঠামোর উপর নিয়ন্ত্রন
৩. চাহিদা সরবারহের নিয়ন্ত্রন করে দাম নিয়ন্ত্রন
৪. কোন মুদ্রায় তা কেনাবেচা হবে সেটি নির্ধারন ।
এই নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্টা যেমন বন্ধুত্ব করে করা হয় তেমনি প্রয়োজনে সংঘাত ,ষড়যন্ত্র, যুদ্ধ-বিগ্রহ কোন কিছুই এতে বাদ যায় না।প্রকৃতপক্ষে জীবাশ্ব জ্বালানির উপর নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সারা দুনিয়ার উৎপাদন ও ভোগের সমগ্র আয়োজনের উপরই প্রতিষ্ঠা করা হয় আধিপাত্য। আর তা করা হয় একটি অসম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাতে করে সমস্ত সম্পদ ভোগ করেেব ধনীক রাষ্টগুলের কিছু সংখ্যক লোক। ঐতিহাসিকভাবেই ধনীক রাষ্ট্রগুলোর প্রতিবেশগত পদচিহ্ন বেড়ে চলে কারন তারা শুধু নিজেদের সম্পদই ভোগ করে না নিশে:ষ করে অন্যদের সম্পদও।তাদের এই চাপিয়ে দেয়া বিধানের ফলে গ্রাম শহরে বিস্তর ব্যবধান তৈরী হয়েছে। কৃষি ব্যাবস্থায় এমন রুপান্তর ঘটানো হয়েছে যাতে তা একচেটিয়া পুজির কেন্দ্রীকরনের হাতিয়ার হয়। পুজিবাদি কেন্দ্র রাষ্ট্রগুলোর স্বর্থে সারা দুনিয়ার মানুষের সাধারন সম্পদ, যেমন- বায়ুমন্ডল,সাগর, বায়ুমন্ডলের কার্বন শোষনক্ষমতা ইত্যাদিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। গ্লোবাল নর্থ অধিক তাদের জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারেও সৃষ্ট আবর্জনা যা আজকে চরম পরিবেশ বিপর্জয়ের কারন হযে দাড়িয়েছে। তাকে বায়ু মন্ডলে ছরিয়ে দিয়েই তারা ধনী ও শক্তিশালি হয়ে উটেছে। তাদের জীবশ্ব জ্বালানি নির্ভর অর্থনীতি প্রথিবীর ধারন ক্ষমতার চাইতেউ বেশি বর্জ নি:সরন করছে। এই নি:সরনের পরিমানে এখন পর্যন্ত প্রকট। অনেক কম কার্বন নির্গমন করেউ এর ফলাফল ভোগ করতে হচ্ছে বিশেষ করে প্রান্তিক রাষ্টগুলোর।খড়া,ঘুর্ন্ধসিঢ়;ঝড়,জলোচ্ছাস তো আছেই সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্বির কারনে সম্পুর্ন তলিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের মত দেশ।
উত্তরণের উপায কি হতে পারে- গবেষণা ও চুলচেরা বিশ্লেষন দীর্ঘদিন ধরে চলছে। মোটাদাগে বলতে পারি – মানুষ-প্রকৃতির সম্পর্কের ইতিবাচক রুপান্তর ঘটাতে হবে। উৎপাদন ও ভোগের বিদ্যমান ব্যবস্থার বদল ঘটাতে শ্রেণী সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে।পশ্চিমা জীবনধারার যে বিশ্বায়ন ঘটেছে তার খপ্পর হতে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা আরো সহজ ভাবে প্রান্তিক মানুষের মতামত নিয়ে বিষয়টি এভাবে বলতে পারি। যেমন-মানিকগঞ্জ মেতুরা গ্রামের কৃষক নেতা তোতা মিয়া বলেন যখন কারেন ছিল না, উন্নত যোগাযোগ গাড়ি,মোবাইল এত কিছু ছিল না তখনই মনে হয় ভাল ছিলাম, এখন ব্যয় বাড়ছে সড়কে প্রতিদিন মানুষ মরছে ঝুকি বাড়ছে আবার শুনি গ্যসের মজুদ ফুরিয়ে আসছে তাই আমি আগেই চিন্তা করে এক ঘরে সোলার ব্যবহার করি তাতে আমার বিল কম দিতে হয়। শীতের দিনে শীত কম লাগে গরমের দিনে আরাম লাগে সরকার এগুলো ব্যবহর করতে বাধ্য করতে পারে এবং বিদ্যুৎ সমস্যা সহজেই দুর করতে পারে বলে আমি মনে করি। ঘিওরের পয়লাতে আব্দুল কুদ্দুস বলেন আগে যদি জানতাম তাহলে বাড়িতে কারেন আনতাম না সোলার দিয়ে অনেক ভাল আছি।বাড়িতে গরু পালন করি বায়োগ্যস ব্যবহার করি তাতে আমার প্রতি মাসে কমপক্ষ্যে ২০০০ টাকা সাশ্রয় হয়।ঁজ্বালানি সংকট মোকাবেলায় গ্রামীন মানুষের অবদান কিন্তু কম নয়, আসলে শহরের মানুষ আরামে থাকে আমাদেরকে পরিবেশের জ্ঞান দেয়। মানিকগঞ্জ জেলার বানিযাজুরিতে সংগ্রাম করে বেছে আছেন লক্ষী রানী মন্ডল। তিনি বলেন গরুর গোবর দিয়ে নিজে রান্না করি এবং বিক্রি করেউ উপার্জন করি, নিজ হাতের রান্না খাই বয়স ৭০ শরীরে বড় ধরনের রোগ ব্যাধি নেই, কিন্তু এখন ভয় পাই কি যেন এক ভাইরাস এসেছে কারেনের মতে শট করে ধরলেই নাকি মরে। এগুলো প্রকৃতিমাতার উপর বিরুপ আচরনেরই ফল বলে আমি মনে করি। বিশেষত সৌরশক্তিকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ এর চাহিদা পুরন করতেই হবে,শহর ও নগরের বর্জ্র,পশু-পাখির বর্জ্যকে শক্তিতে রুপান্তর করে জ্বালানির চাহিদা পুরন করতে হবে,উন্নত চুলার সহজ রুপান্তর করে গ্রামের দারিদ্রতা ও কার্বন নি:সরন কমাতে হবে। মোট কথা নতুন করে পৃথিবীটাকে সাজনোর এক বিপুল আয়োজন করতে হবে। এগুলো করতে পারলে পরিবেশ ভালো থাকবে, জলবায়ু পরিবর্তন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। আমরা প্রকৃতির উপর বিরুপ আচরন না করে ইতিবাচক পদ্বথিতে শ্রেণী সংগ্রামের মাধ্যমে সমাজ ও সভ্যতার রুপান্তর ঘটাতে পারলে অবশ্যই এই ধরনের প্রাণঘাতি মহামারি রুখতে পারব।