পতাকা ডেস্ক: গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে প্রশাসন প্রায় স্থবির হয়ে পরেছে। পুরো প্রশাসন ব্যবস্থা নাগরিক সেবার পরিবর্তে দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হওয়ায় জনগণ তার সঠিক সেবা পাচ্ছেনা। বিসিএস ক্যাডারের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে ঢোকার সাথে সাথে বেশির ভাগ ব্যক্তি নিজেকে জনগণের সেবক ভাবার পরিবর্তে জনগণের মালিক হিসেবে হাজির হয়। ফলশ্রুতিতে জনপ্রশাসনের সকল কার্যক্রম জনভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে বলে দাবি করেছে এবি পার্টি। আজ জনপ্রশাসনে অরাজকতা নিরসন ও সংস্কার বিষয়ে করণীয় নিয়ে আমার বাংলাদেশ পার্টি- এবি পার্টি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন দলের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে পার্টির পক্ষ থেকে মূল বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবি পার্টির আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার ও যুগ্ম আহবায়ক লে. কর্ণেল (অবঃ) দিদারুল আলম। উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান ও মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন।
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ তার বক্তব্যে বলেন, ঔপনিবেশিক আমলের প্রশাসনিক কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা দিয়ে জনতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা সম্ভব নয়। তিনি গনঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ পুনঃর্বিনির্মানে এবি পার্টির পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত প্রস্তাবনা তুলে ধরেন :
১. সরকারী চাকুরীতে ক্যাডার ভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে জাতীয় পুল তৈরী করা দরকার;
২. পুরাতন আমলের চাকুরীর নিয়োগ প্রক্রিয়া, পরীক্ষা পদ্ধতি এবং ভাইবা গ্রহনের বদলে শারিরীক, মানসিক, মানবিক ও মেধার সৃষ্টিশীলতা যাচাই করবার আধুনিক পদ্ধতি চালু করতে হবে;
৩. বাংলাদেশ পূর্ব আমলে আমলাদের প্রশিক্ষনের দুই বছর মেয়াদী কোর্স চালু করতে হবে;
৪. স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারে নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকুরীর যোগ্যতা ও শর্ত আলাদা করে উল্লেখ করে জাতীয় পত্রিকাতে বিজ্ঞাপন দিয়ে নিয়োগ করতে হবে;
৫. পিএসসি ও জনপ্রশাসন কেন্দ্রীক নিয়োগের বদলে প্রতিটা মন্ত্রনালয়ের আলাদা বিশেষায়িত নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে;
৬. ক্যাডার/নন-ক্যাডার এবং আন্ত-ক্যাডার বৈষম্য দূরীকরনে মেধা, যোগ্যতা, নিষ্ঠা এবং বেতন-ভাতা সহ সুবিধাদির বিষয়ে ইনসাফ ভিত্তিক সমাধান করতে হবে;
৭. পিএসসি’র বাহিরেও ক্যারিয়ারের যে কোন পর্যায়ে আমলাতন্ত্রে যোগ দেবার সুযোগ থাকতে হবে। প্রবাসী অসংখ্য যোগ্য ও দক্ষ লোকদেরকে কিভাবে জনগনের খেদমতে নিয়োজিত করা যেতে পারে, সেটার পথ উন্মুক্ত রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে দ্বৈত নাগরিকত্বের কোন আইনি বাঁধা থাকলে সেটা দূর করতে হবে;
৮. জনগনের সেবা ও খেদমত কে কেন্দ্রে রেখে পুরো প্রশাসন যন্ত্রকে প্রযুক্তি নির্ভর করে গড়ে তোলা দরকার;
৯. জনপ্রশাসন সংস্কার কমিটি কে ঢেলে সাজানো দরকার, এই খাতের বিশেষজ্ঞ সহ সরকারী চাকুরীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব সাঈদ নোমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার ফারুক, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, আহমেদ বারকাজ নাসির, উত্তরের যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রব জামিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিপন মাহমুদ, এবি যুবপার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব শাহিনুর আক্তার শীলা, পল্টন থানার আহবায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।