
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত শিক্ষক নামধারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জঙ্গি বিরোধী কমিটি গঠন করা হবে। জঙ্গি বিরোধী সামাজিক সচেতনতায় এলাকার আলেম-ওলামা ও গুণীজনদের সম্পৃক্ত করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী রোববার দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সেমিনার কক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে জননিরাপত্তা ও আইনশৃংখলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমদ, সাবেক ছাত্রনেতা এনামুল হক শামীম, ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, স্কলাসটিকা স্কুল প্রধান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) কাউসার আহমদ, মানারাত স্কুলের অধ্যক্ষ মেহেদি হাসান প্রামাণিক, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) আতিকুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ভিসি আব্দুল মান্নান চৌধুরী, ইউডার উপাচার্য প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদ, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মালিক সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন প্রমুখ।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিশ্চিত করতে হবে। কোন শিক্ষার্থী যদি লাগাতারভাবে ১০দিন যুক্তিসঙ্গত কারন ছাড়া হাজির না হয় তবে শিক্ষক বিষয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে ও অভিভাবককে অবহিত করবেন। এরপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান বিষয়টি শিক্ষা প্রশাসনকে জানাবেন। শিক্ষা প্রশাসন বিষয়টি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনকে জানাবে। জেলা প্রশাসন আইন শৃংখলা বাহিনীকে বিষয়টি জানাবে। যাতে করে আইন শৃংখলা বাহিনী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি কোন জাতীয় দিবস পালন না করে, জাতীয় পতাকা না উত্তোলন করে তবে মনিটরিং করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, অভিভাবকদের তাদের সন্তানের প্রতি নজর রাখতে হবে। সন্তানের পরিবর্তন লক্ষ্য করলে শিক্ষককে জানাতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের মতো বিষয়ের ক্ষেত্রে বিরোধী সামাজিক চেতনা গড়ে তুলতে হবে, সামাজিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা ঐক্যবদ্ধতার বিরোধী, অন্যায় কাজ, মানবতাবিরোধী ও জঙ্গিবাদের পক্ষে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। একঘরে করতে হবে। আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। জনে জনে যোগাযোগ গড়ে তুলবো।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে হুশিয়ার করে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কথা ও শর্ত শুনবেন না, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মানবেন না তাদের থাকার অধিকার নেই।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে চিনতে হবে। যদি শিক্ষক যুক্তি দেখান যে এতো শিক্ষার্থীকে চিনবো কী করে, তাহলে বলবো, যদি চিনতেই না পারেন তবে ভর্তি করালেন কেন, যতোটুকু সামর্থ রয়েছে ততটুকু করবেন। ৩০ জনকে চিনলে ৩০ জনই ভর্তি করান। কিন্তু আপনার ছাত্র যেন জঙ্গিবাদের মতো বিপথে না যায়।
মন্ত্রী বলেন, এদেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব মিলে ৩৮ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। শিক্ষার্থীদের রয়েছে অতীত ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্য কলঙ্কিত করতে দেয়া যাবে না। এদেশের কোনো শিক্ষার্থী জঙ্গিবাদে যাতে আর জড়াতে না পারে সেজন্য সব ধরণের ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। এজন্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক,পেশাজীবী সবাইকে সচেতন হতে হবে।