পাত্র-পাত্রী দু’জনেরই বয়স ২৬ বছর। কিন্তু বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে গেলেন। কারণ তারা বিয়ে করার মতো ‘সাবালক’ হননি। জাপানের রাজকন্যা মাকো এবং পাত্র কেই কোমুরো বিয়ে ভেঙে দেয়ার কারণ হিসেবে এমনটাই জানিয়েছেন।
অথচ বিয়ের দিনক্ষণ পাকা হয়ে গিয়েছিল। সকলকে জানিয়েও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নোসাই নো গি’তে বিয়ের অনুষ্ঠানের ঠিক এক মাস আগেই পাত্রপাত্রীর এহেন সিদ্ধান্ত। বলা বাহুল্য, এর জেরে গোটা রাজ পরিবারে হুলুস্থুল পড়ে গেছে। রাজ পরিবারের এহেন বড় মাপের অনুষ্ঠানে এই বদল সকলের চক্ষু ছানাবড়া করে দিয়েছে। রাজ পরিবারের এক অফিসার জানান, এই ধরনের পরিস্থিতি ব্যক্ত করা ‘বড়ই অস্বস্তিকর।’ কিন্তু সকলকে এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিরই মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
যুবরাজ আকিশিনোর সবথেকে বড় মেয়ে রাজকন্যা মাকো বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ‘বিয়ের আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের তোড়জোড় সারার জন্য বা বিয়ের পর গোটা জীবন একসঙ্গে কাটানোর মতো পর্যাপ্ত সময় আমাদের নেই।’ তিনি এও বলেছেন, ‘আমার মনে হয় আমরা খুব তাড়াতাড়ি করে ফেলছি। অনাকাঙ্ক্ষিত এই সময়ই নানা দোটানার সৃষ্টি করছে। আমাদের একমাত্র আক্ষেপ যে আমরা বিয়ে করার মতো সাবালক হইনি বলেই এই সমস্যা হচ্ছে।’
রাজ পরিবারের গার্হস্থ্য বিষয়ের তদারককারী তাকাহারু কাচি মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে বিয়ে বাতিলের খবর ঘোষণা করেন। পাশাপাশি রাজকন্যা এব্যাপারে যা বলেছেন, সেই বিবৃতিও প্রকাশ করেন। বিয়ের আগে পর্যাপ্ত সময় না থাকার প্রসঙ্গে কাচিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আগামী বছরে সম্রাটের কিছু অনুষ্ঠান রয়েছে। তার তোড়জোড়ও বাকি আছে। সেটাও বিয়ে বাতিল করার অন্যতম এক কারণ। তবে পূর্বনির্ধারিত বিয়ের সূচিতে এমন কী তোড়জোড় বাকি থেকে গেল তা নিয়ে কাচিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কার্যত সেই প্রশ্ন এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, ‘এর ব্যাখ্যা দেয়া বড়ই কঠিন। আমি নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারব না।’
উল্লেখ্য, গত বছরের শেষের দিক থেকেই সাপ্তাহিক পত্রিকায় কোমুরো পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার কথা প্রকাশিত হচ্ছে। যদিও কাচি জানান, বিয়ে বাতিলের জন্য কোমুরো পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার কোনও সম্পর্ক নেই। ‘পাত্র-পাত্রী দু’জনে বিয়ে করতেই চান।’ অথচ সেই রাজকন্যাই বিবৃতি পেশ করে জানাচ্ছেন যে তিনি বিয়ে করছেন না। মঙ্গলবার মিনাতো ওয়ার্ড থেকে রাজকন্যা মাকো গাড়ি করে আকাসাকা এস্টেটে ফিরে আসেন। যখন তিনি গাড়ি থেকে নামছেন তখন পরনে তার কালোরঙা সুন্দর এক পোশাক। কিন্তু মুখ একেবারে ফ্যাকাসে। তিনি সাংবাদিকদের দিকে একবারও না তাকিয়ে ভিতরে চলে যান। রাজকন্যা আসার দশ মিনিট পরই চুও ওয়ার্ডে পৌঁছায় কোমুরোর গাড়ি। তারও চোখেমুখে ভাবলেশহীন অভিব্যক্তি। সাংবাদিকরা তাঁর দিকে নানা প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে দিলেও তিনি কোনো উত্তরই দেননি। শুধু সাংবাদিকদের কোনোরকমে ঠেলে কোহুকু ওয়ার্ডের ভিতরে ঢুকে যান।