শফকিুল ইসলাম সুমন, মানকিগঞ্জ: বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ বলেছেন, আমরা গত ১৫ বছর স্বৈরাচারী সরকারের শাসনামলে নানা ভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। বিএনপি জামায়াত সহ আরো অন্যান্য দল মিলে আন্দোলন করেছিলাম, আমাদের সাধ্য অনুসারে চেষ্টা করছি। কিন্তু আমরা পারিনি তবে পেরেছে আমাদের সন্তানেরা,ছাত্র-জনতা মিলে ৩৬ দিনেই গণবিপ্লব ঘটিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) সকালে জেলার সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়ন ও দুপুরের শিবালয় উপজেলার রুপসা এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ আফিকুল ইসলাম সাদ এবং রফিকুল ইসলামের কবর জিয়ারত ও আর্থিক সহযোগিতা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই জুলুমতন্ত্র কোন পর্যায়ে গেলে, দেশের সাধারণ মানুষদের আয়না ঘরে নিয়ে মাসের পর মাস,বছরের পর বছর ধরে নির্যাতন করা হতো। ব্যারিষ্টার আরমান,জেনারেল আযমীকে দীর্ঘ সময় আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে এবং একই ভাবে দেশের শতশত মানুষকে একই কায়দায় নির্যাতন দমন করা হয়েছে।
ইজ্জত উল্লাহ বলেন,স্বৈরশাসক সরকার বিদেশ থেকে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ করে উন্নয়নের নামে বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। ব্যাংক গুলোকে ফোকলা করে দিয়েছে, বাংলাদের অর্থনৈতিক অবস্থা চরম ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা এ দেশ থেকে দূর্নীতি করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
কেন্দ্রীয় জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা আরো বলেন, দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতিতে ১৮ কোটি জনতা তাদের জীবন পরিচালনা করতে নাভিশ্বাস উঠেছে। অর্থনৈতিক খাতে চরম দূর্নীতিতে ভরে গেছে, দুঃশাসনে নির্যাতিত নিপীড়িত হয়েছে আমাদের সমাজের মানুষের উপর। বিগত স্বৈরশাসকের (৫ আগষ্ট) কারফিউ ভেঙ্গে দেশের ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে এসেছে এক ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটিয়েছে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা উত্তর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, মানিকগঞ্জ জেলা আমীর হাফেজ মাওলানা কামরুল ইসলাম, সাটুরিয়া উপজেলার আমীর মোঃ আবু সাঈদ, শিবালয় উপজেলা আমীর মোঃ হাতেম আলীসহ আরো অনেকে।
উল্লেখ্য, সোমবার (৫ আগষ্ট) দুপুরের দিকে ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে মিছিল করা অবস্থায় পুলিশের গুলিতে আহত হন সাদ। পরে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (৮
আগষ্ট) মারা যায় সাদ। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ঘাটে বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে নৌ-পুলিশের অতর্কিত গুলি বর্ষণ করে এবং সেই গুলিতে রফিকুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়। রফিকুল ইসলামকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী তাদের নিজ দলের ফান্ড থেকে দুই শহীদ পরিবারকে দুই লাখ করে মোট চার লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।