sliderস্থানীয়

চিলমারীতে বন্যয় বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ

নয়ন দাস,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ চিলমারীতে বন্যার আরও অবনতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা প্রবল বর্ষণে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। তলিয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শত শত একর জমির পাটসহ বিভিন্ন ফসল।
পানি বৃদ্ধির ফলে অষ্টমীরচর ইউনিয়নে গত কয়েক দিনের নদী ভাঙনে ২০-২৫টি পরিবার নদী গর্ভে বিলীন হওয়াসহ প্রায় ১০০টি পরিবার হুমকির মুখে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও অষ্টমীরচর ইউনিয়নের খোর্দ বাশপাতার, খামারবাশপাতার, ছালিপাড়া, চরমুদাফৎ কালিকাপুর ও নটার কান্দি এলাকার প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। নয়ারহাট ইউনিয়নের বজরা দিয়ারখাতা, নাইয়ারচর, উত্তর খাউরিয়া পশ্চিমপাড়া ও খেরুয়া নতুন গ্রাম এলাকায় প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার, রমনা ইউনিয়নের নতুনগ্রাম, ফকিরপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, নৌবন্দর এলাকাগুলোর প্রায় ২০০ পরিবার, চিলমারী ইউনিয়নের ৩০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
এ ছাড়া রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্বদিকে নয়াবস, মজারটারী, চড়েয়াপাড়া, বাগানবাড়ী, জকরিটারী, তেতুলকান্দি, মাঝিপাড়া এলাকাগুলোর প্রায় ৭ শতাধিক পরিবার মিলে মোট প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তা ছড়া চরাঞ্চলের শত শত একর জমির পাটসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
এদিকে অষ্টমীরচর ইউনিয়নের চর মুদাফ কালিকাপুর এলাকায় ১৫-২০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় ৩০টি বাড়ি।
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) মো. আবু সালেহ সরকার বলেন, উপজেলার ৩৫ প্রাইমারি স্কুলে পানিতে তলিয়ে গেছে। সেই স্কুল গুলো ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, নদী ভাঙন ও বন্যা কবলিত লোকজনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বন্যার্তদের সাহায্য অত্যন্ত জরুরি, তাই এ বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে পাউবো ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টের গেজ রিডার জোবায়ের হোসেন জনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বিপৎসীমার ২২ সে. মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দী মানুষের মাঝে এখন পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে কোনো সাহায্য দেওয়া হয়নি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কুমার প্রণয় বিষাণ দাস বলেন, চিলমারী উপজেলায় নিম্নাঞ্চলে পাট, বীজতলা, শাকসবজি, আউশ ধান সহ ৬৫০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময় খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button