
শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: প্রায় ৩৫ বছর পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনামসজিদ স্থলবন্দর হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তুকরণের কাজ শুরু হয়েছে।
তবে রাস্তাটি পুরাটাই প্রশস্তকরণ না হওয়ায় জনমনে কিছুটা ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। কারণ রাস্তাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অন্যান্য রাস্তার চেয়ে বহুগুণ বেশী ব্যস্ত। এ রাস্তাটি প্রশস্তকরণের জন্য দীর্ঘদিন যাবত দাবী দাওয়া চলছিল।জনবহুল এ রাস্তাটি সর্বশেষ উন্নয়ন কাজ হয়েছিল ১৯৯০-৯১সালে দিকে। যখন সোনামসজিদ স্থল বন্দর চালু হয়। তখন সড়কটি ৬.২ মিটার প্রশস্ত করে নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে সময়ের ব্যবধানে ব্যবসা-বানিজ্যের উন্নতি ও জনসংখ্যা বৃদ্ধিার কারণে এ রাস্তায় বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের সংখ্যা অনেকগুণ বেড়েছে। বেড়েছে দূর্ঘটনা। অকালে প্রাণ হারাচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশা অনেক মানুষ। অনেকেই চিরতরে পঙ্গুত্ববরণও করছেন। তাই জনসাধারণের দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে শুরু হয়েছে সড়কটির প্রশস্তকরণের কাজ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর জানিয়েছে, মহাসড়কটি প্রায় ৩৫ বছর পুরনো এবং এর গড় প্রস্থ ৬ দশমিক ২ মিটার। সড়কটি এখন ১০ দশমিক ৩ মিটার পর্যন্ত প্রশস্ত করা হচ্ছে। মোট ৩১ দশমিক ৩ কিলোমিটার অংশে এই উন্নয়ন কাজ হবে। এর মধ্যে বারঘরিয়া বাজার এলাকায় ৩০০ মিটার, রানীহাটি বাজার এলাকায় ৫৫০ মিটার ও শিবগঞ্জের ছত্রাজিতপুর বাজার এলাকায় ৪০০ মিটার মোট প্রায় ১২৫০ মিটার অর্থাৎ এক কিলোমিটার ২৫০ মিটার। রাস্তাাকে চারলেনে উন্নীত করা হবে, যা রিজিড পেভমেন্ট দিয়ে নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়াও এ রাস্তায় সবচেয়ে দূর্ঘটনা প্রবণ দুটি এলাকা বহালা বাড়ি ও বেঁকির মোড় এ দুটি বাঁককে সরলীকরণ অর্থাৎ বাঁক নির্মুল করা চেষ্টা করা হবে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে প্রশস্ত কালভার্ট নির্মান, দুটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ইন্টারসেকশন এবং বাস ও ট্রাকের জন্য পৃথক লেন নির্মাণ করা হবে। সওজ সূত্রে জানা গেছে,২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে একনেক সভায় ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়ক যথাযথ উন্নতমানের ও প্রশস্তকরণের’ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩৪২ কোটি টাকা ব্যয় হবে সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণে, আর ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ১৩৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালের জুন মাসে। সড়ক ব্যবহারকারীদের মতামতেও প্রশস্তকরণ প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট।
মহারাজপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আলিম বলেন,এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহনে লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে। পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তাই পুরা রাস্তাটি চারলেন করার দাবী জানাচ্ছি। রামচন্দ্রপুর হাটের বাসিন্দা আব্দুল ওহাব বলেন,এই সড়কটি অনেক ব্যস্ত। দুই লেনের হওয়ায় এবং বেশি বাঁক থাকার কারণে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা এড়াতে চারলেন রাস্তার বিকল্প নাই। সোনামসজিদ স্থল বন্দর এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হারুর অর রশিদ জানান, দেশের বা এলাকার উন্নতিতে উন্নত রাস্তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সোনামসজিদ হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তাটি পুরাটাই চারলেন করার দাবী জানাচ্ছি। রাস্তাটি চারলেন হলে দূর্ঘটনা কমবে। ব্যবসা বানিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটবে। বেকার সমস্যার সমাধান অনেকেটই কমবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ্ মো. আসিফ বলেন, সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনা করে বারঘরিয়া বাজার থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিবগঞ্জের দুর্ঘটনাপ্রবণ বাঁকগুলোও সরল করা হবে। বারঘরিয়া, রানীহাটি ও ছত্রাজিতপুর বাজার এলাকায় রাস্তা হবে চারলেনের। তিনি আরও বলেন, মানুষের দুর্ভোগ কমাতে আমরা প্রথমে রাস্তার পাশে প্রশস্তকরণের কাজ করব। পরে মূল রাস্তার সংস্কার করা হবে, যাতে চলাচলে কোনো ভোগান্তি না হয়। আশা করছি, আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।




