
পতাকা ডেস্ক : বরেণ্য অভিনয়শিল্পী শর্মিলী আহমেদ আজ মারা গেছেন ভোরে। এই শোকের মাঝেই সংস্কৃতি অঙ্গনে এলো আরও এক শোকের খবর। সংগীত পরিচালক আলম খান আর নেই। আজ সকাল ১১টা ৩২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না লিল্লাহি রাজিউন)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার পুত্র ও সংগীত পরিচালক আরমান খান। ‘ওরে নীল দরিয়া, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফুরাইলে ঠুস, আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো গন্ধ বিলিয়ে যাই, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, কি জাদু করিলা পিরিতি শিখাইলা, তুমি যেখানে আমি সেখানে, সবাই তো ভালবাসা চায়’ এমন অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুর করেছেন আলম খান।
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে তাকে বলা হয় সুরের জাদুকর। তার সুরে গান গেয়ে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন অনেক শিল্পী। পপসম্রাট আজম খানের বড় ভাই তিনি। ১৯৪৪ সালের ২২ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাথি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
সংগীতজ্ঞ আলম খানের পুরো নাম খুরশিদ আলম খান। পিতার নাম আফতাব উদ্দিন খান।
মায়ের নাম জোবেদা খানম। গুলবানু খানের সাথে দাম্পত্য জীবনে দুই ছেলে আরমান খান ও আদনান খান এবং এক কন্যা আনিকা খানের জনক তিনি।
আলম খান ছোটবেলা থেকে গানের প্রতি ভালোবাসা ছিলো অন্যরকম। সেই জের ধরেই গানের ভুবনে প্রবেশ। ১৯৭০ সালে আবদুল জব্বার খানের ‘কাঁচ কাটা হীরে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। তারপর অসংখ্য ছবির সংগীত পরিচালনা করেন। সৃষ্টি করেন একের পর এক শ্রুতিমধুর এবং জনপ্রিয় গান।
আলম খানের সুর ও সংগীত পরিচালনায় সৃষ্ট অসংখ্য গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো-
‘ওরে নীল দরিয়া
‘হীরামতি হীরামতি ও হীরামতি’
‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফুরাইলে ঠুস’
‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো গন্ধ বিলিয়ে যাই’
‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’
‘কি জাদু করিলা পিরিতি শিখাইলা’
‘বুকে আছে মন’
‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’
‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’
‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’
‘চাঁদের সাথে আমি দেবো না তোমার তুলনা’
‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’
‘আজকে না হয় ভালোবাসো আর কোনওদিন নয়’
‘তেল গেলে ফুরাইয়া’
‘আমি তোমার বধূ তুমি আমার স্বামী’
‘জীবনের গল্প বাকি আছে অল্প’
‘মনে বড় আশা ছিল’
‘দুনিয়াটা মস্ত বড়’
‘ও সাথীরে যেও না কখনো দূরে’
‘বেলি ফুলের মালা পরে’
‘কাল তো ছিলাম ভালো’
‘ওরে ও জান আমারই জান’
‘চুমকি চলেছে একা পথে’
‘ভালোবাসিয়া গেলাম ফাঁসিয়া’
‘তুমি কি এখন আমারই কথা ভাবছো’
‘আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটাইরে’
‘তিন কন্যা এক ছবি’
আলম খান দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ‘বড় ভাল লোক ছিল’ (১৯৮২), ‘তিন কন্যা’ (১৯৮৫), ‘সারেন্ডার’ (১৯৮৭), ‘দিনকাল (১৯৯২) এবং ‘বাঘের থাবা’ (১৯৯৯) ছবিগুলোতে শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে ২০০৮ সালে পেয়েছেন ‘কি জাদু করিলা’ ছবির জন্য।