sliderস্থানীয়

চলনবিল মাছ ধরার ‘বাউত উৎসবে’ মেতেছে হাজারো মানুষ

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি: চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী ‘বাউত উৎসবে’ মেতেছেন শৌখিন মাছ শিকারিরা। এই উৎসবকে ‘পলো উৎসব’ নামেও চেনেন অনেকে। উৎসবে যোগ দিতে শনিবার (২ নভেম্বর) দূর-দূরান্ত থেকে চলনবিলে ছুটে আসেন শৌখিন মৎস্য শিকারিরা। এরপর হৈহুল্লোরে বিলের জলে শুরু হয় মাছ শিকার।

সরেজমিনে দেখা যায়, উৎসবে যোগ দিতে ১১টি বাস গাড়ি, ৭টি ট্রাক ও ৪টি পিকআতে চেপে চলনবিলে জড়ো হয়েছেন সিংড়া চলনবিলে, সালুল্লাপুর, সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ি, গোবিন্দগঞ্জ, বনারপাড়া এলাকার প্রায় ১৫০০ শিকারি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা একসঙ্গে মাছ শিকার করেছেন। তাদের হাতে ছিল পলো, চাক পলো, নেট পলো, ঠেলা জাল, বাদাই জাল, লাঠি জালসহ মাছ ধরার নানা সরঞ্জাম। একসঙ্গে বিলে নেমে মাছ ধরার আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন শিশু-কিশোর, যুবক, বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ। শৌখিন মাছ শিকারিরা একত্রিত হয়ে সারিবদ্ধভাবে বিলে পলো, ঠেলাজাল, বেরজাল দিয়ে মাছ শিকার করেন। এ সময় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ যেমন শোল, বোয়াল, গজার, রুই, কাতলা, চিতল, পুঁটি, খৈলসা, শিং, টেংরা, পাবদা মাছ ধরা পড়ে। দুপুরের দিকে মনে বেশ আনন্দ নিয়ে গন্তব্যে ফিরে যান শিকারিরা।

চলনবিল পরিবেশ উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি এস.এম রাজু আহমেদ জানান, দল বেঁধে মাছ ধরার এ আয়োজনে মৎস্য শিকারিদের ডাকা হয় বাউত। তাদের ঘিরেই উৎসবের নামকরণ। ভোরের আলো ফুটতেই বিলাঞ্চলে দলবেঁধে মাছ শিকারে নামেন বাউতের।

চলনবিলে মাছ ধরতে আসা বাউত উৎসবের মৎস্য শিকারি গাইবান্ধা পলাশবাড়ী এলাকার শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি প্রায় ৮ বছর ধরে মৎস্য শিকার করি। শখের বসে মাছ শিকারে প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাই। এখানে এলে অনেক আনন্দ হয়। মাছ কেউ পাই আর না পাই, বাউতের একটা উৎসব হয়। এজন্যই আমরা আসি।

পলাশবাড়ী বাসুদেবপুর এলাকার সাহেব মিয়া তিনিও ছোট বড় কয়েকটি মাছ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তার এক হাতে ছিল পলো আর এক হাতে শিকার করা মাছ। পবনাপুর এলাকার আব্দুল কাদের বলেন, বহু আগে থেকে হবিগঞ্জের হাওরগুলোতে মাছ শিকারে পলোর ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই আমরা আজ চলনবিলে মাছ শিকার করতে এসেছি।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button