রতন ঘোষ,কটিয়াদী প্রতিনিধি : আধুনিক যান্ত্রিক যুগে বিলুপ্তপ্রায় গরু কিংবা মহিষ দিয়ে হাল চাষ । বর্তমানে হাল চাষে ব্যবহার করা হয় ইঞ্জিন চালিত পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টর।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার কোমর ভোগ গ্রামের মেনু মিয়া (৫০)প্রায় তিন বছর যাবত অন্যের জমিতে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করে সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পর আমন ধানের জন্য জমি প্রস্তুত করতে জুড়ে শুরে নেমে পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা। তাই কদর বেড়েছে মেনু মিয়ার ঘোড়ার হালের। বুধবার ৩০শে আগস্ট সকালে উপজেলার দরিচরিয়া কোনা গ্রামে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করতে দেখা যায় মেনু মিয়া কে। তার সাথে আলাপে তিনি জানান, ঘরে মা, স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলে আছে। তার নিজস্ব কোন জমা জমি নেই। অন্যের জমি বর্গা চাষ করে অভাব অনটনে চলছিল তাদের সংসার । কিন্তু জ্বালানি খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায, বাড়তে থাকে ফসলের উৎপাদন খরচ । যার ফলে বছর তিনেক আগে তিনি ৪৪হাজার টাকায় দুটি ঘোড়া ক্রয় করে অন্যের জমিতে হাল চাষ শুরু করেন। মেনু মিয়া আরো জানান ঘোড়া দিয়ে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে সুন্দর ভাবে জমি চাষ করা যায়। ১ বিঘা জমি চাষ দিয়ে প্রকার ভেদে খরচ নেওয়া হয় ৩৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ ছয় বিঘা জমে চাষ করা যায়, তা থেকে সংসার ও ঘোড়ার খরচ বাদ দিয়ে মোটামুটি ভালই সঞ্চয় থাকে।
এলাকার জমির মালিক ও কৃষক মোঃ জমির উদ্দিন বলেন বর্তমানে এই উপজেলায় চাষাবাদের জন্য কোন গরুর হাল নেই। তাই সবাই পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টর দিয়েই জমি হাল চাষ করে থাকেন। কিন্তু এতে জমি সমান হয় নাএবং খরচে ও বেশি পড়ে । ঘোড়া বা গরু দিয়ে চাষ করলে জমি সমান হয় এবং আগাছা কম থাকে । ফলে জমিতে পানি ধারণের ক্ষমতা বাড়ে।তাই কম খরচে মেনু মিয়ার ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করছি। কটিয়াদী উপজেলার সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ মঈনুল ইসলাম বলেন, ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ মেনু মিয়ার জীবিকা নির্বাহীর পথ সৃষ্টি করেছে বটে,তবে বর্তমানে এটি একটি অপ্রচলিত পদ্ধতি। কৃষি বিভাগ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষাবাদ করার জন্য সব সময়ই কৃষকদের কিংবা জমির মালিকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।