দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে ৬৪ জেলা ও ৪৯৫ উপজেলায় স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানের সমাপ্তি উপলক্ষে আজ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বুধবার সকালে ২৭ কোর্ট হাউজ স্ট্রীট, ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন হানিফ বাংলাদেশী।
সংবাদ সম্মেলনে হানিফ বাংলাদেশী বলেন, আমি হানিফ বাংলাদেশী, সব সময় রাষ্ট্রের নানা অনিয়ম অসংগতি বিরুদ্ধে এবং জন দাবি নিয়ে প্রতিবাদ করি। এই পর্যন্ত পরপর চারবার ৪টি ভিন্ন ভিন্ন দাবি নিয়ে ৬৪ জেলায় চারবার প্রদক্ষিণ করেছি। দাবি বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের স্মারকলিপি দিয়েছি। গত ৫ই জুন থেকে ৪৯৫ উপজেলা প্রদক্ষিণ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ঘুষ, দুর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচার ও নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। আমি গত বছরের ৫ই জুন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা থেকে কর্মসূচি শুরু করে দীঘ ৮ মাস সারাদেশ প্রদক্ষিণ করে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি তেঁতুলিয়া উপজেলায় স্মারকলিপি দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেছি।
বিভিন্ন জেলা উপজেলায় প্রদক্ষিণ করে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তার আলোকে হানিফ বাংলাদেশী বলেন, ঘুষ দুর্নীতি বিদেশে অর্থ পাচার যে পর্যায়ে উপনিত হয়েছে সেটা কোন দলীয় সরকার বন্ধ করতে পারবে বলে আমার মনে হয় না। কারন, দুর্নীতিবাজ ও অর্থপাচারকারীরা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সকল অপকর্ম করছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দুর্নীতি অর্থ পাচার অতীতেও হয়েছে এখনো হচ্ছে। রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতি প্রতিহিংসা পরায়ণ এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে গ্রাম, পাড়া, মহল্লায় এই অপরানীতির অসুস্থ চর্চা চলছে। কথায় কথায় একে অপরকে কুপিয়ে হত্যা করেছে, পিটিয়ে আহত করেছে, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে, সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ, সামাজিক মেলবন্ধন ও এখন অপরাজনীতির কবলে পতিত হচ্ছে। সামাজিক আচার আচরন ও দলীয় রাজনীতি দিয়ে বিবেচনা করা হয়, যা ভয়ংকর মনে করছি। রাষ্ট্র আলাদা একটি সত্ত্বা এবং সরকার আলাদা একটি সত্ত্বা, রাজনীতি আলাদা বিষয় কিন্তু ৫১ বছর যাবত রাজনৈতিক দল গুলো যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা সবাই নিজেদের হীন স্বার্থে রাষ্ট্র এবং সরকারকে একাকার করে ফেলেছে। দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা দলীয় কর্মীর মত আচরণ করছে। এটিও ভয়ংকর রুপ ধারন করেছে। দুর্নীতি অর্থ পাচার বন্ধ করতে হলে, রাষ্ট্র থেকে সরকার আলাদা করতে হলে এবং সুস্থধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হলে শুধু ক্ষমতার পালাবদল দিয়ে এটি সম্ভব নয়, একটি রাজনৈতিক অভ্যুত্থান (১—২ বছরের জন্য মইনদ্দিন—ফখরুদ্দিনের আদলে একটি জাতীয় সরকার) প্রয়োজন বলে আমি মনে করছি।
তিনি বলেন, আরেকটি বিষয় আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে সমাজে ধনী দরিদ্রের মধ্যে যেমন তফাৎ প্রকট আকার ধারণ করেছে তেমনি ধর্মীয় প্রতিহিংসা, ধর্মীয় উসকানি জোরালো হচ্ছে, এই অবস্থার উত্তরণে একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লব প্রয়োজন, সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে মানবিক সমাজ গঠন সম্ভব বলে মনে করছি। আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করছি মানুষের মাঝে মানবিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় চলছে। ঠকবাজি সমাজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সচিবালয় পর্যন্ত কোন সরকারি অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ করতে পারছেনা সাধারণ মানুষ, ঘুষ দুর্নীতি অর্থ পাচার সর্বগ্রাসী রুপ নিয়েছে, এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে আরো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
হানিফ বাংলাদেশী দাবি করেন, বাংলাদেশে তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি ৬৪ জেলায় ৪ বার প্রদক্ষিণ করেছেন এবং ৪৯৫ উপজেলা ১ বার প্রদক্ষিণ করেছেন। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, নির্বাচন কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রের নানা অনিয়ম অসংগতি বিরুদ্ধে একক ব্যক্তি হিসাবে এই পর্যন্ত ৭৬০ টি স্মারকলিপি দিয়েছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি