sliderস্থানীয়

ঘিওরে ভিজিএফ চাল নিয়ে চালবাজি

ব্যাপক অনিয়ম ও ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ

আব্দুর রাজ্জাক, মানিকগঞ্জ ॥ মানিকগঞ্জ ঘিওর উপজেলার সিংজুরি ইউনিয়নে ভিজিএফ কার্ডের চাউল বিতরনে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও ওজনে কম দেয়া ও কার্ডধারী ছাড়াও অনেককে চাল দেয়া হয়েছে। এনিয়ে বন্যা পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্থ ও হতদরিদ্র কার্ডধারী ব্যক্তিদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ভূক্তভূগী লোকজনের সাথে গত বুধবার কথা বললে তারা জানান, আমরা কি করবো বালতি দিয়ে মাইপা দেয় তাই বস্তায় বৈড়া নিয়া আসি। কয় কেজি দেয় জানিনা। বস্তায় চাউল আছে ওজন দিয়ে দেখুন। তখন সিংজুরী বাজারে জনগনের মাঝে চাউলের বস্তা ওজন দিয়ে দেখা যায় প্রতি ব্যাগে (১৪ /১৫ ) কেজি করে চাল রয়েছে। এরপর আরো ৬-৭ জনের চাউলের বস্তা ডিজিটাল মিটারে ওজন করে চাউল কমের সত্যতা পাওয়া গেছে ।
সরজমিনে দেখা গেছে, প্রকৃত মনিটরিং না থাকায় তিন মাস ব্যাপী দুঃস্থ পরিবারের মাঝে বন্যা পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্থদের ভিজিএফের চাল নিয়ে চলছে হরিলুট কারসাজি। চাল বিতরণের সময় সরকারি তদারকি কোনো কর্মকর্তাকে দেখা যায়নি। ওজনে কম দেয়ার সাথে সাথে লিষ্টের বাইরে অতিরিক্ত গরীবদের নাম করে চলছে চাল আত্মসাৎ করার চেষ্টা। শুধু তাই নয় ২য় মাসের চাল অক্টোবরে বিতরণের কথা থাকালেও অজ্ঞাত কারনে নভেম্বর মাসে বিতরণ করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।
ভিজিএফ কার্ডধারী ষাটোর্ধ্ব প্রিয়বালা সরকারের ব্যাগে পাওয়া গেছে ১৪ কেজি, বৃদ্ধা সন্ধ্যা রানী সরকার আয়াতন বেওয়া, প্রবীণ আফসার আলীও পেয়েছেন ১৪ কেজি ৩শ গ্রাম করে চাল। চাল কম পাওয়া এমন আরো অনেক দরিদ্র মানুষের অভিযোগ, আমরা গরীব মানুষ ! আমাগো যে কয় কেজি চাইল দিছে তাই আমাগো কপালে আছে। ভয়ে তারা আরও জানায়, চেয়ারম্যান মেম্বাররে কিছু কয়েন না তাইলে আমাগো আর চাইল দিওন বন্ধ কইরা দিবো।
সিংজুরী ইউ.পি চেয়ারম্যান আঃ আজিজ মাস্টার জানান, আমরা ৮ টন ৭৮০ কেজি চাল পেয়েছি। সিংজুরী ইউনিয়নের মোট ৯টি ওয়ার্ডে লিষ্ট অনুযায়ী ভিজিএফ রিলিফ ভোক্তার সংখ্যা ৪৩৯ জন। চাহিদার থেকে চাল কম পাওয়ায় লিষ্টের বাইরেও অনেক দরিদ্র লোককে চাল দিতে হচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রত্যেককে ১৮ কেজি চাল দেয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও অতিরিক্ত লোক আসার ফলে আমরা প্রত্যেককে ১৬ কেজি করে চাল বিতরণ করছি। তবে তিনি এলজিএসপি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন চাল বুঝে আনার সময়ই প্রতি বস্তায় চালের পরিমাপ কম থাকে।
ভিজিএফ চাল বিতরনের সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ট্যাগ অফিসার কল্পনা আক্তার জানান, প্রত্যেক গ্রহীতাকে অবশ্যই ১৮ কেজি করে চাল বিতরণ করতে হবে। পরিমানের হেরফেরের কারনে হয়তো কেউ কিছু কম চাল পেয়েছে। তবে ১৭ কেজির নিচে কোন মতেই চাল দেয়া যাবে না। অভিযোগ পাওয়ার পর আমি ইউনিয়ন পরিষদের সবাইকে নিয়ে এ বিষয়ে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা খন্দকার জানান, এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button