
আব্দুর রাজ্জাক,ঘিওর (মানিকগঞ্জ) : ঢাক, ঢোল আর কাঁসার ঘন্টার শব্দে চারপাশে উৎসবের ঢেউ। বাদ্যের তালে ছন্দময় নৃত্যে লাঠি নিয়ে অঙ্গভঙ্গি আর কসরত প্রদর্শন করছেন লাঠিয়ালরা। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও তাকে আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা। দর্শকরাও করতালির মাধ্যমে উৎসাহ যোগায় খেলোয়াড়দের।
গতকাল শনিবার বিকেলে ঐতিহ্যের এই লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয় মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের নন্দীরবাঁধা গ্রামে।
নন্দীরবাঁধা গ্রামের সাধক আফতান পাগলার মাজার শরীফে ২৭ তম বাৎসরিক ওরস মোবারক উপলক্ষে ৮ দিন ব্যাপী আয়োজন করা হয় মেলার। এই মেলায় বিভিন্ন গ্রামীন অনুষ্ঠানাদি পালিত হচ্ছে।
মেলার প্রথম দিনে উপজেলার কান্দা কুষ্টিয়া আয়নালের দল ও দৌলতপুর উপজেলার কাকরাইদ গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের দল লাঠি খেলায় অংশগ্রহণ করেন। গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাটি দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-শিশুরা ভিড় জমান। মেলার মাঠ পরিণত হয় মানুষের মিলন মেলায়। মেলার হরেক রকম পসরা নিয়ে বসেন দোকানীরা।
খেলায় অংশ নেওয়া প্রবীণ লাঠিয়াল সর্দার আব্দুস সামাদ জানান, গ্রামীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বাপ-দাদার স্মৃতিস্বরুপ তারা এ খেলাটি খেলে থাকেন। তবে এই খেলার সঙ্গে জড়িতরা প্রায় সবাই গরিব। সরকারিভাবে সুযোগ-সুবিধা পেলে নিয়মিত চর্চা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই খেলাকে আরও বড় পরিসরে মানুষের সামনে তুলে ধরার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও পয়লা ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, কমিটির সাধারন সম্পাদক আবু সাঈদ কুটি বাবু, খাদেম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তার প্রধান, মোঃ আয়ুব আলী।
মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি হারুণ অর রশিদ বলেন, ঐতিহ্য রক্ষায় গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া লাঠি খেলার আয়োজন করা হয় আশেপাশের কয়েক গ্রামের বৌঝি মেয়ে জামাইরা সবাই বছরের এই দিনটার জন্য অপেক্ষায় থাকেন।