নাটোর প্রতিনিধি : গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিষ্ট আশরাফুল আলম স্বপন দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে পেষণে (ডেপুটেশেন) রয়েছেন। ফলে ওষুধ পেতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। নিয়ম ভেঙ্গে দির্ঘদিন ডেপুটেশনে থাকলেও কর্তৃপক্ষ ওই ফার্মাসিস্টের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্র বলছে-২০১৮ সালে শূণ্যপদে ফার্মাসিস্ট হিসেবে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন আশরাফুল আলম। সে সময়ই তিনি ডেপুটেশন নিয়ে নাটোর সদরের রানী ব্রজসুন্দরী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চলে যান। এতে করে কাগজে কলমে গুরুদাসপুর হাসপাতালে দুইজন ফার্মাসিস্ট দেখা গেলেও বাস্তবে একজন ফার্মাসিস্ট দিয়ে সেবা চালু রাখা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে-২০০৯ সালে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। ভৌগলিক কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চলনবিলের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষ ছাড়াও আশপাশের সিংড়া, বড়াইগ্রাম, তাড়াশ ও চাটমোহর উপজেলার বহু মানুষ এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। প্রতিদিন প্রায় ৬’শ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন। কিন্তু জনবল সংকটে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিস্ট নাজমুল হাসান জানান, প্রতিনিদিই ফার্মাসীর সামনে রোগীর ভীড় জমে। তাছাড়া বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা, প্রবীণ স্বাস্থ্য সেবা ও চক্ষু রোগীদের সেবা চালু থাকায় বেড়েছে রোগীর চাপ। ফার্মেসিতে তিনি একা হওয়ায় রোগীদের ওষুধ দিতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। একই সাথে ওষুধ নিতে প্রতিদিন রোগীদের লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
গর্ভবতী আলেয়া বেগম, ষাটোর্ধ খইমন বেওয়াসহ অন্তত দশজন রোগী অভিযোগ করেন, ওষুধ নিতে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। তাদের মতো রোগীদের লাইনে দাঁড়িয়ে ওষুধ নেওয়া কষ্ট সাধ্য ব্যপার। ফার্মাসিস্ট সংকট দূর করলে দূর হবে ওষুধ নেওয়ার ভোগান্তিও।
ফার্মাসিস্ট আশরাফুল আলম ভোগান্তির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বৃদ্ধ পিতা-মাতার সেবা করার লক্ষ্যেই তিনি বছর পাঁচেক আগে ডেপুটিশেন নিয়ে নিজের এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় ডেপুটেশনে থাকার বিধান নেই। ফার্মাসিস্ট আশরাফুল আলমের অনুপস্থিতির কারনে একজন ফার্মাসিস্ট দিয়ে রোগীদের ওষুধ সরবরাহ করা কষ্টকর। ওই ফার্মাসিস্টকে অন্যত্র বদলী করে নিয়মিত ফার্মাসিস্ট পদায়ন অথবা ডেপুটেশন বাতিলের বিষয়ে তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষে জানাবেন।
নাটোরের সিভিল সার্জন মশিউর রহমান জানান, খোঁজ নিয়ে তিনি এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।