গাজায় ভয়াবহ অবস্থায় বাস করছে ১০ লাখ শিশু

গাজা উপত্যকায় ১০ লাখেরও বেশি শিশু ‘বসবাসের অনুপযোগী’ অবস্থায় আছে। শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ‘সেইভ দ্য চিলড্রেন’ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, এসব শিশু এখন ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তাদের অবস্থা বর্তমানে এমন দাঁড়িয়েছে যে, একে কখনোই বসবাসের উপযুক্ত স্থান বলে গণ্য করা যায় না। সংস্থাটির মতে, এখানকার ৯০ ভাগ পানিই দূষণের শিকার। এছাড়া চারপাশের সমুদ্রের ৬০ ভাগ পানিই স্যুয়ারেজের কারণে দূষিত হয়েছে। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এটি ইসরাইলি অবরোধের শিকার। আর এ কারণে অধিবাসীদের অসহায়ের মতো জীবন যাপন করতে হচ্ছে। তারা না পাচ্ছে ঠিকমতো পানি, না পাচ্ছে বিদ্যুৎ।
সংস্থাটি জানায়, ‘পরিবেশগত সংকট’ এর পাশাপাশি এখানে রয়েছে মারাত্মক বিদ্যুত সংকট। আর এর সরাসরি শিকার হচ্ছে শিশুরা। তারা যেমন রাতে ঠিকভাবে ঘুমাতে পারছে না, তেমনি দিনের বেলায় পাচ্ছে না একটু খেলার জায়গা। আর বিদ্যুতের কারণে পারছে না ঠিকমতো পড়াশুনা করতে। সংস্থাটি জানায়, ৭৪০ টি স্কুল বিদ্যুৎ ছাড়াই চলছে। প্রতিটি পরিবার গড়ে দুই থেকে চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ পায়।
জাতিসংঘের তরফ থেকে বলা হয়েছে, গাজা থেকে যদি অবরোধ তুলে না নেওয়া হয়, তাহলে ২০২০ সাল নাগাদ মানুষের বসবাস এখানে একেবারে অনুপোযোগী হয়ে যাবে। গত জুলাইয়ে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,সেখানে অবরোধ আরোপের পর থেকেই তাদের জীবনমান অসহনীয় অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে। এই ভূখণ্ড নিয়ে কাজ করা একটি মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে,এই স্থানটিকে অনেক আগেই বসবাসের অনুপযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সংস্থাটির শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তা ক্যারোলিন অ্যানিং বলেন, গাজায় মানবিক সংকট দিনে দিনে আরো অনেক মারাত্মক হচ্ছে। এ কারণে সংস্থাটি গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার আহবান জানিয়েছে।
গাজায় ‘সেইভ দ্য চিলড্রেন’ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর জেনিফার মুরহেড বলেন, এখানকার শিশুরা সেই অবরোধ শুরু থেকেই নিদারুণ কষ্টে আছে। ১০ বছর ধরেই তারা এই কষ্ট ভোগ করছে। তিনি বলেন, এভাবে নাগরিক সুবিধা না পেয়ে মানুষের বসবাস সত্যিই অমানবিক। আল জাজিরা/ইত্তেফাক।