
জঙ্গলের ভেতরে সিংহের গর্জণের মধ্যে তিন যমজ শিশুর জন্ম দিয়ে সংবাদ শিরোনাম হয়েছেন ভারতের গুজরাটের এক নারী।
ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও সংবাদ প্রতিদিন জানায়, রবিবার আন্তর্জাতিক মা দিবসে এমন অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটে।
দয়া বড়াইয়া নামে ওই নারী গুজরাটের অমরেলি জেলার দেদান গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামটিকে ঘিরে রেখেছে রাজ্যের বিখ্যাত গির অরণ্য। সেখানে ১৮টি সিংহের বাস।
গর্ভবতী দয়া বড়াইয়ার প্রসব বেদনা শুরু হলে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে খবর দেয়া হয়। তাও কয়েক ঘণ্টার পথ সেটি।
ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান গোবিন্দ বাম্ভানিয়া বলেন, “যখন আমরা ফোন পাই তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। দয়া বড়াইয়ার তখন প্রসব বেদনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। আমরা দেদন গ্রামে গিয়েছিলাম। কিন্তু তখন তাকে আর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না।”
অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই শুরু হয় সব ধরনের পরিচর্যা। জঙ্গলের মধ্যে কোনও অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম ছিল না বা চিকিৎসক ছিলেন না।
বাম্ভানিয়া সেখানেই ওই নারীর প্রসবের চেষ্টা শুরু করেন। নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। ফোনে কথা বলেন হাসপাতালেরই প্রসূতি বিভাগের এক চিকিৎসকের সঙ্গে।
নরমাল ডেলিভারিতেই পরপর তিনটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন দয়া। আশ্চর্যভাবে ওই নারী যতবারই প্রসব বেদনায় চিৎকার করে উঠছিলেন, ততবারই গর্জে উঠছিল সিংহ।
বাম্ভানিয়া বলেন, “ওই নারী একের পর এক তিনটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। প্রতিটিই নর্মাল ডেলিভারি। তার সহ্য ক্ষমতাকে আমি সালাম জানাই।”
অ্যাম্বুল্যান্সের চালক রাজু বরিসাগর এখনও রবিবার রাতের ঘটনা ভুলতে পারেননি। তিনি জানান, এমন ঘটনার সাক্ষী তিনি আগে কখনও হননি। সারাজীবন এই ঘটনাটি মনে থাকবে তার।
বরিসাগর বলেন, “আমাদের অ্যাম্বুল্যান্সটি গির অরণ্যের মধ্যে রাখা হয়েছিল। চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার। প্রতিবারই যখন ওই নারী ব্যথায় ককিয়ে উঠছিলেন, সঙ্গে সঙ্গেই সিংহের রক্ত হিম করে দেওয়া গর্জন কাছাকাছি শোনা যাচ্ছিল।”
দয়া বড়াইয়ার এমন অত্যাশ্চর্য ঘটনায় অবাক নন গ্রামবাসীরা। সিংহের সঙ্গে থাকা তো তাদের কাছে নতুন কোনও ঘটনা নয়। বরং জয়ার মা হওয়ায় গোটা গ্রামে খুশির হাওয়া।