সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ)প্রতিনিধি: রাজনীতি অশুভ শক্তির হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্র, কখনই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলীয় নেতার মূখপাত্র কাজী মামুনূর রশীদ। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গণতন্ত্রের জন্য সুখকর নয়। তাদের অনেকের হাতে গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুন্য হয়েছে। লেভেল প্লেইং ফিল্ডের নামে কেউ কেউ এক পেশি নির্বাচন করেছেন। পল্লীবন্ধু এরশাদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (১৫ জুলাই) মানিকগঞ্জের সিংগাইর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত দোয় ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় কাজী মামুন বলেন, পল্লীবন্ধুর হাতেই দেশে দু দু’বার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায়। ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর আজীবনের জন্য দেশের সংবিধানে সামরিক শাসন আসার পথ বন্ধ করে দিয়ে গেছেন এরশাদই। আর ৯০ এর ৬ ডিসেম্বর জনগণের চাওয়া পাওয়া ও দাবি মেনে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষা করে গেছেন পল্লীবন্ধু।
তিনি বলেন, জনগণ ও গণতন্ত্রের প্রতি একমাত্র এরশাদই শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়ে গেছেন। রাজনীতিতে উদারতাও ছিল তাঁর। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে অস্থায়ী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছিল, তারাই সুষ্ঠু নির্বাচনকে কুলষিত করেছেন। পল্লীবন্ধু ও জাতীয় পার্টির নির্বাচন এবং রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নেয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তিনি বলেন, এমপি মন্ত্রী ও শীর্ষনেতাদের উপর জেল-জুলুম,মামলা-হামলা চালিয়ে পার্টির নেতাকর্মীদের নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলো সব সময় কোনো না কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে।
বিরোধী দলীয় নেতার মূখপাত্র বলেন, উপমহাদেশে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সংস্কারক পল্লীবন্ধু এরশাদের উন্নয়নে ভীত হয়ে তাঁকে সেদিন টিভি-রেডিওতে ভাষণ দিতে দেয়া হয়নি। তারপরও সে নির্বাচনে কারাবন্দি এরশাদ পাঁচ পাঁচটি আসনে বিজয়ী হন। দল ৩৫টি আসনে জয়লাভ করে। আর প্রায় ৭৮টি আসনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন লাঙ্গলের প্রার্থীরা।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন বলেন, সিংগাইরের উন্নয়নে জাতীয় পার্টির বিকল্প নেতৃত্ব নেই। প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে সারাদেশে অকল্পনীয় উন্নয়ণ হলেও সিংগাইর বরাবরই বঞ্চিত। তিনি বলেন, পাশ্ববর্তী সাভার-কেরানীগঞ্জে যে উন্নয়ণ হয়েছে, তার ১০ শতাংশও হয়নি সিংগাইর-হরিরামপুরে।
এসময় তিনি বলেন, ঢাকার সঙ্গে জেলা শহরের সংযোগ প্রতিষ্ঠায় হেমায়তপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ সড়ক নির্মাণ করে গেছেন এরশাদ। দোয়া মাহফিলে উপস্থিত নেতাকর্মী ও স্থানীয় মুরব্বিদের হাত উঁচিয়ে সাবেক মন্ত্রী বলেন, এটা ভুলে গেলে চলবে না। সিংগাইর-মানিকগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ণ করে গেছেন পল্লীবন্ধু এরশাদ। সিংগাইরে আগামীতে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানান গোলাম সারোয়ার মিলন।
সিংগাইর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি আবুল বাশারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দোয়া ও আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় আহবায়ক ফকির আল মামুন, জাপা নেতা আব্দুল আজিজ চৌধুরী, ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আবু সাঈদ লিয়ন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবুল কামাল আজাদ, মো. শহিদুল ইসলাম(মেম্বার), সাখায়াত হোসেন, আমির হোসেন খোকা, আব্দুস সাত্তার খান, পৌর জাপার সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন খোকা, বশির আহমেদ মেম্বার, সিংগাইর সদর ইউনিয়ন জাপার সাধারণ সম্পাদক মো.রজ্জব আলী, মো. মারুফ হোসেন, আব্দুল মান্নান, যুবনেতা আদিল মাহমুদ, ছাত্রনেতা মিলন মাহমুদ প্রমূখ।