
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের অতীতের কথা স্মরণে রেখে এই সরকার বাতিল করে অনতিবিলম্বে দেশে আরেকটি নির্বাচন দিন। একবার যদি দেশের জনগণ রাস্তায় নেমে আসে তাহলে এই সরকার, সরকারের দল কেউ রেহাই পাবে না।’
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে’ আয়োজিত মানববন্ধনে কৃষক দলের আহ্বায়ক এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী চালক দলের উদ্যোগে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই উল্লেখ করে এ সময় শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘গণতন্ত্রের কথা বললেই যেন অপরাধ হয়। গণতন্ত্রের কথা বললেই মামলা হয়, কারাগারে যেতে হয়। দেশে ভোটের অধিকার নেই। ভোটের অধিকারের কথা বললেই এক থেকে ১০০টি মামলা হয়। বিএনপি ও বিরোধী দলের বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মামলা হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘একটি অদ্ভূত ব্যাপার- যে দেশে স্বাধীনতার জন্য, গণতন্ত্রের জন্য ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন, দুই লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন, হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হয়েছে, সেই গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা এখন নেই। এখানে একটি কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচারী, অবৈধ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘খালেদা জিয়া স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় বছর আন্দোলন করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই দেশে কেয়ারটেকার সরকারের আইন সংসদে পাস করেছিলেন। তিনি একমাত্র নেত্রী, যিনি মানুষের অধিকারের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আইন পাস করেছিলেন। সেই নেত্রীকে একেবারে মিথ্যা মামলায় প্রায় ১৭ মাস ধরে কারাগারে আটকে রেখেছে। এই মানববন্ধন থেকে তাঁকে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হোক।’
শামসুজ্জামান দুদু আরো বলেন, ‘গত ছয় মাস আগে এই দেশে জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। ৩০ তারিখের নির্বাচন ২৯ তারিখ রাতে হয়েছে। এই নির্বাচন আমেরিকা মানে নাই, ব্রিটেন মানে নাই, জাতিসংঘ মানে নাই। এই দেশের যে পরাশক্তি দলগুলো আছে, তারা মানে নাই। অথচ এই অবৈধ সরকার ২৯ তারিখের অবৈধ নির্বাচনের কথা বলে ক্ষমতা ধরে রেখেছে। আমি সরকারকে বলব, অনতিবিলম্বে দেশে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে নতুন করে নির্বাচন দেওয়া হোক।’
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অতীতের কথা স্মরণ করে এই সরকার বাতিল করে অনতিবিলম্বে দেশে আরেকটি নির্বাচন দিন। একবার যদি দেশের জনগণ রাস্তায় নেমে আসে তাহলে এই সরকার, সরকারের দল কেউ রেহাই পাবে না। তাই বলব, মানসম্মান নিয়ে বিদায় হতে চাইলে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করুন। একটি কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন।’
সংগঠনের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবিরের সভাপতিত্বে ও দেশ ‘বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের সভাপতি ও কৃষক দলের সদস্য কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ফরিদ উদ্দিন, কৃষক দলের সদস্য লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, আজম খান, জাতীয়তাবাদী চালক দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মানিক তালুকদার, সহসভাপতি শাফিন আহমেদ লিখন, মুক্তার আকন্দ প্রমুখ।