পতাকা ডেস্ক : জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষনের উপর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এবি পার্টি বলেছে; গণঅভ্যুত্থানের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে অস্থিরতা ও দীর্ঘসূত্রিতা কোনটাই কাম্য নয়। জনগণের দূর্ভোগ লাঘব করতে না পারলে সংস্কারমূলক কোন পদক্ষেপই সফল করা যাবেনা বলে মনে করে দলটি। আজ বিজয়নগরস্থ এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই অভিমত ব্যক্ত করেন এবি পার্টির নেতৃবৃন্দ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একমাসপুর্তির পর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষনে নির্বাচন কমিশন, সংবিধান, পুলিশ প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কারের জন্য যে ছয়টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে সংবাদ সম্মেলন থেকে তাকে সাধুবাদ জানানো হয়। কমিশনগুলো যেন দ্রুত কাজ শুরু করতে পারে এবং কোন দীর্ঘসূত্রিতায় জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশে পুলিশী নিস্ক্রিয়তায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও প্রমোশন, পদায়ন এবং পোস্টিং সহ নানা কারনে জনপ্রশাসনের অস্থিরতা নিরসনের আহবান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার, বিএম নাজমুল হক, লে. কর্ণেল (অবঃ) হেলাল উদ্দিন, দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, অনেক ত্যাগ ও জীবনের বিনিময়ে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমরা তার সাফল্য চাই। কিন্তু যেটা দৃশ্যমান হচ্ছে যে সিদ্ধান্ত নিতে একদিন লাগার কথা তা পাঁচ দিনেও হচ্ছেনা, উপরন্তু প্রশাসনে চলছে অস্থিরতা। আমরা বার বার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরও এখনো পুলিশকে সক্রিয় করার কোন পদক্ষেপ দেখছিনা। ইতোমধ্যেই জনপ্রশাসনের অস্থিরতার বিষয়ে আলী ইমাম মজুমদারের ভুমিকা নিয়ে বিরাট প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আমরা সুস্পষ্ট ভাবে বলতে চাই সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া সেখানে অস্থিরতার কোন সুযোগ নাই। আমরা সরকারকে বার বার বলছি আপনাদের কার্যক্রম নিয়ে মানুষ গত সরকারের সাথে তুলনা করবে, সেখানে আপনাদের ব্যার্থ হওয়ার সুযোগ নাই। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষনে বার বার ছাত্র-জনতার বিপ্লবের কথা বলছেন, আমরা সরকারের ভুমিকায় সত্যিকার অর্থেই বিপ্লবের চেতনা দেখতে চাই, কথার কথা নয়।
তিনি ছয়টি কমিশন গঠনের কথা উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচন কমিশন ও দূর্নীতি দমন কমিশন নিজেই একটা কমিশন, এই জায়গা গুলোতে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে সেখানে তাদেরকে সরাসরি কমিশনের চেয়ারম্যান আকারে নিয়োগ দিলেই তারা যথেষ্ট সংস্কার করতে পারতেন। নতুন করে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ফেলার কোন প্রয়োজন ছিলোনা।
মঞ্জু বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগে ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা না থাকায় মানুষ কোন সেবা পাচ্ছে না। সেখানে যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা জনগণকে যথাযথ সেবা দিতে পারছেনা। এটা নিয়ে সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে। তিনি সরকারের বিভিন্ন ইতিবাচক ভুমিকার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষনে আমরা কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছি, অন্তত সংস্কারের একটা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমরা বার বার বলছি এখনি পুলিশকে সক্রিয় করতে হবে এবং প্রশাসনের সকল অস্থিরতা দূর করতে হবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, এনামুল হক শিকদার, এবি ওয়াহেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার ফারুক, আব্দুল হালিম খোকন, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহবায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, আব্দুর রহমান, শরণ চৌধুরী, পল্টন থানার আহবায়ক মুন্সি আব্দুল কাদের সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।