sliderস্থানীয়

কুড়িগ্রামে অবৈধ ইটভাটায় ফসলি জমি ও পরিবেশ বিপন্ন

এ আর লিমন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলার ৯ উপজেলায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেললাইনের ধারে, প্রধান সড়ক এবং জনবসতি এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক অবৈধ ইটভাটা। দীর্ঘদিন ধরে এসব ভাটা পরিচালিত হলেও প্রশাসনের নিরব ভূমিকা জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। সরকারি আইনের তোয়াক্কা না করে ফসলি জমির টপ সয়েল (উপরিভাগের মাটি) ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে, যা কৃষি উৎপাদনে ধস নামার আশঙ্কা বিরাজমান।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, ফুলবাড়ী, উলিপুর, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর ৯ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জনবসতি ও দুই-তিন ফসলি জমিতে অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। অনুমোদনবিহীন এসব ভাটার কারণে আবাদি জমি ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষি জমির মাটি ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও অবাধে চলছে কাটাছেঁড়া। ইটভাটায় মাটি সরবরাহ করতে সাধারণ কৃষকদের নগদ টাকার লোভ দেখানো হচ্ছে। অনেক কৃষক দালালদের প্ররোচনায় পড়ে জমির ওপরিভাগের মাটি বিক্রি করছেন।

ভাটার মালিকরা এক ফুট মাটি কাটার কথা বললেও দেড় ফুট বা তার চেয়েও বেশি মাটি কেটে নিচ্ছেন। এর ফলে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি গ্রামীণ সড়ক নষ্ট হচ্ছে। পরিস্থিতি অনিয়ন্ত্রিত থাকায় জেলার ফসলি জমি ও পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ দ্রুত কামনা করছেন ভুক্তভোগীরা। কুড়িগ্রাম পাটেশ্বরী এলাকার কৃষক গনি মিয়া বলেন- ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার কারণে জমি উঁচু-নিচু হয়ে যাচ্ছে। এতে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি পাকা ও কাঁচা রাস্তার ক্ষতি হওয়ার সাথে সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংলগ্ন এলাকায় ইটভাটা নির্মাণের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

নাগেশ্বরী সন্তোষপুর এলাকার এসবি ভাটার মালিক আপেল বলেন- তাদের ভাটার গত বছরের অনুমতি ছিল এবং এবারও অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছে। সবাই অনুমোদন ছাড়াই ভাটায় আগুন দিয়েছে তাই তিনিও ভাটায় আগুন দেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের কুড়িগ্রাম সহকারী পরিচালক মো. রেজাউল করিম জানান, কুড়িগ্রাম জেলার ৩৫টি ইটভাটার হালনাগাদ ছাড়পত্র রয়েছে। তিনি আরও বলেন, নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে অনুমোদন বিহীন এবং নিয়ম ভঙ্গকৃত ভাটার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার ১০৮টি ইটভাটার মধ্যে ৩৫টির হালনাগাদ ছাড়পত্র থাকলেও ৭৩টি ইট ভাটার ছাড়পত্র নেই। অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button