এ আর লিমন,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্যাকেজ মূল্যে যে চাল বিক্রি করছে, তা পোকাযুক্ত ও দুর্গন্ধ বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৬ মার্চ) ও রবিবার জেলার সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নে এ ধরনের চাল বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তারা।
পোকাযুক্ত চাল বিক্রির কথা স্বীকার করলেও এর দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন টিসিবির ডিলার মেসার্স ত্রিরত্ন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রকিব উদ দৌলা। তিনি বলেন, ‘ভোক্তাদের অভিযোগ ও আপত্তির কথা জানিয়ে আমরা বারবার খাদ্য বিভাগকে ভালো মানের চাল দেওয়ার জন্য বলেছি। তারা চাল পরিবর্তন করে দেননি। ফলে যেমন চাল দিচ্ছেন, আমরা তেমনটাই বিক্রি করছি।’
ভোক্তাদের অভিযোগ, বেলগাছা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালে গ্রামে শনিবার ও রবিবার ৫২৫ টাকা প্যাকেজ মূল্যে দুই লিটার তেল, দুই কেজি ডাল, এক কেজি ছোলা ও পাঁচ কেজি চাল বিক্রি করা হয়। অন্যান্য পণ্যে সমস্যা না থাকলেও ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা চালে দুর্গন্ধ ও পোকা ছিল। খাওয়ার উপযোগী না হওয়ায় অনেকে এসব চাল বিক্রি করে দিয়েছেন।
কালে গ্রামের বাসিন্দা ও টিসিবির কার্ডধারী সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘একে তো চালে দুর্গন্ধ তার ওপর পোকা হেঁটে বেড়াচ্ছে। দুর্গন্ধ এত বেশি যে তা খাওয়ার উপযোগী নয়। এসব চাল খেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। আমি না খেয়ে রেখে দিয়েছি।’
রেলস্টেশন এলাকার বাসিন্দা ও টিসিবির কার্ডধারী মাহাবুব হোসেন ও মনিরন বেগমের বাড়িতে গিয়ে একই ধরনের চাল পাওয়া যায়। তারা বলেন, ‘এই চাল খাওয়া যায় না। এগুলো খেলে অসুস্থ হয়ে যাবো।’
একই এলাকার বাসিন্দা মিনিরানি বলেন, ‘টিসিবি থেকে কেনা চালে দুর্গন্ধ আর পোকা। এই চাল খাওয়া যায় না। আমি আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে টিসিবির ডিলার রকিব উদ দৌলা বলেন, ‘আমি শুধু শনিবার চাল বিক্রি করেছি। রবিবার করিনি। ভোক্তারা আমাদের প্রায়ই অভিযোগ করেন। আমরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে বলেছি, ভালো চাল দিতে। আমরা গোডাউন থেকে চাল নিয়ে আসি না, তারা পাঠিয়ে দেন। গোডাউন থেকে যেমন চাল পাঠিয়ে দেন, আমরা তেমনই বিক্রি করি। এতে আমাদের কিছু করার থাকে না। যখনই নতুন চালের সঙ্গে পুরাতন চালের বস্তা পাঠানো হয়, তখনই এমন অভিযোগ ওঠে। আমরা বলেছি, এভাবে দুর্নাম নিতে রাজি নই।’
তবে খাওয়ার অনুপযোগী চাল বিক্রির কোনও সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করেছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল কাবির খান। তিনি বলেন, ‘আমরা ওয়ারেন্টি অনুযায়ী পেছনের সারি থেকে চাল দিয়ে থাকি। কিন্তু সেসব চাল অবশ্যই খাওয়ার উপযোগী হতে হবে। পোকা ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল বিক্রির অভিযোগ এখনও পাইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। এ ধরনের চাল বিক্রি হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘চালের সমস্যা থাকার অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। কোনও ভোক্তার কাছে নিম্নমানের চাল থাকলে নমুনা সংগ্রহের পর যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।