অর্থনৈতিক সংবাদশিরোনাম

করোনায় মালিকের মৃত্যু, বেতন না পেয়ে দুর্ভোগে শ্রমিকেরা

ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ডিইপিজেড) ভেতরে অবস্থিত একটি সোয়েটার শ্রমিকেরা গত তিন মাস ধরে কারখানাটি বন্ধ থাকার কারণে বেতন পাচ্ছে না।
গত রবিবার কারখানা কর্তৃপক্ষ বকেয়া বেতন দেওয়ার জন্য তারিখ দিয়েও করোনায় দুজন মালিকের মৃত্যু হওয়ায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে পারেনি।
এই অবস্থায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের আক্রমণ যেন ভুক্তভোগী শ্রমিকদের জীবনে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন তারা খেয়ে না খেয়ে পাওনাদারের চাপে এবং নানা দুর্ভোগের শিকার হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
ভুক্তভোগী শ্রমিকেরা বলেন, গত জানুয়ারি মাস থেকে তাদের বেতন বন্ধ। কয়েক দফায় আশ্বাস দিয়েও কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন পরিশোধ করেনি। সর্বশেষ গত রবিবার বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘এ ওয়ান’ কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের জন্য কারখানার সামনে উপস্থিত হলেও কারখানাটি বন্ধ দেখতে পান।
এ সময় কারখানার মূল ফটকের সামনে আগামী ১৬ এপ্রিল বেতন পরিশোধের একটি নোটিশ দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন শ্রমিকেরা। পরে বকেয়া বেতন পরিশোধ ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক বেপজার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক কল্পনা আক্তার বলেন, করোনার প্রভাবে নতুন কোনো কারখানায় বা অন্য কোনো কাজ জোটাতে পারেননি।
আজাহারুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের ঘরে নগদ টাকা নেই। চাল, ডাল কিচ্ছু নেই। এরপর বাসার ভাড়া, দোকানের বাকি ও করোনাভাইরাসের আতঙ্ক সব মিলিয়ে খুব বিপদের মধ্যে আছি।
এদিকে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) জানিয়েছে, ‘এ ওয়ান’ নামের ওই কারখানার মালিক কয়েকজন ইতালীয়। মালিকদের মধ্যে দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তারা ইতালি থেকে এটি চালাতেন। এ ছাড়া গত কয়েক মাস ধরে কারখানাটিতে কাজ কম থাকায় গত জানুয়ারি মাস থেকে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এ অবস্থায় বাংলাদেশের এক ব্যবসায়ীর কাছে কারখানাটি বিক্রির সবকিছু পাকাপাকি হয়। কিন্তু ওই ব্যবসায়ী সম্প্রতি সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে কোয়ারেন্টাইনে থাকায় লেনদেন হয়নি। আর টাকা না পাওয়ায় শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা যায়নি।
বেপজার জনসংযোগ কর্মকর্তা নাজমা বিনতে আলমগীর বলেন, কারখানা ও ব্যাংক কর্মকর্তাসহ শ্রমিকদের সঙ্গে বেপজার কথা হয়েছে। আগামী ১৬ এপ্রিল শ্রমিকদের আংশিক বেতন এবং পর্যায়ক্রমে তাদের বাকি বেতনসহ অন্যান্য ভাতা দেওয়া হবে। এ ছাড়া কারখানা হস্তান্তর হলে বর্তমানে কর্মরত শ্রমিকেরা সেখানে কাজ করতে পারবে।
সুত্র : দেশ রূপান্তর

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button