পশ্চিমা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ মিশিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার উপদেশ দিচ্ছেন চীনা ডাক্তাররা। কিন্তু গবেষকরা চীনা ডাক্তারদের এমন উপদেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমসে চীনের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা পদ্ধতি ও ওষুধ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় চীন সরকার অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের ককটেলে আশার আলো দেখছে। ঐতিহ্যবাহী পিসফুল প্যালেস বোভাইন পিলকে (গরুর পেটের পাথর, মহিষের শিং, জুঁই ও মুক্তোর গুঁড়ো দিয়ে তৈরি ওষুধ) পশ্চিমা ওষুধের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে।
চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের মতে, ডাক্তারদের উচিত করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় এইচআইভি নিরাময়ে পশ্চিমা ওষুধের ব্যবহার করা। একই সঙ্গে ডাক্তারদের ঐতিহ্যবাহী ওষুধে কীভাবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা যায়, তা যাচাই করে দেখা। ইয়েল ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের ওষুধসংক্রান্ত বিজ্ঞানের অধ্যাপক চেং ইউং চি বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা সঠিক পদ্ধতি। প্রমাণ পেতে হলে সন্দেহের সুযোগ আমাদের নিতেই হবে।’ প্রাণঘাতী ভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন গাছের শেকড়, লিকোরাইস ও পিসফুল প্যালেস বোভাইন পিল কাজ করে এমন কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। উল্টো সমালোচকরা মনে করেন, এ ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার এসব উপকরণ ব্যবহার করা হলে রোগীর ক্ষতি হতে পারে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, ঐতিহ্যবাহী ওষুধের ব্যবহার বাড়াতে মূল চাপটা আসছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের কাছ থেকে। তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পশ্চিমা ওষুধের পাশাপাশি চীনা ওষুধের গুরুত্ব বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। চীনের কিছু হাসপাতাল ইতিমধ্যেই ঐতিহ্যবাহী ওষুধের ব্যবহার শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পেইচিং স্বাস্থ্য দপ্তর জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুই ব্যক্তি ঐহিত্যবাহী ওষুধে সেরে উঠেছে। দেশটির গুয়াংঝৌ শহরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ঐতিহ্যবাহী ওষুধ সেবনের পর ৫০ জন রোগীর জ্বর-কাশি সেরে গেছে।
ঐতিহ্যবাহী ওষুধবিষয়ক গবেষক জিয়াং শিয়াংফেং বলেন, ‘এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে পশ্চিমা ওষুধ ভালো কাজ করে না। চীনের মানুষ বহুবার প্লেগের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ দিয়ে। এ ওষুধ যদি কাজের না হতো, তাহলে চীনের মানুষ এতদিনে শেষ হয়ে যেত।’