sliderমতামতশিরোনাম

করলা তিতা লাগলেও করলার ভিটামিন শরীরের জন্য খুব দরকারি

তারেক রহমান,ঢাকা : এক্সারসাইজ করলে আলাদা আয় হয় না, কেউ বেতন দেয় না। কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য এটা আমরা করি প্রতিদিন আর ঘণ্টা ব্যাপী। কিছু জিনিস অর্থহীন হলেও এর বড় মূল্য আছে।
তেমনি নির্বাচন অনেকের কাছে এই মুহুর্তে অপ্রিয় হলেও এটা জরুরি।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের সময় এমন সংস্কারের প্রশ্ন আসে। সেই সংস্কার হয়ও বটে। কিন্তু সংস্কার করল কে?

৭০ এর নির্বাচনের রাজনৈতিক নেতাদের হাতে স্বাধীন দেশ চলে গেল মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে না গিয়ে। বিপ্লবীদের হাতে দেশ না গিয়ে দেশ গেল স্বাধীন বাংলাদেশ না চাওয়া রাজনীতিবিদ মুজিব এর হাতে।
একজন যোদ্ধার মস্তিষ্কে দেশপ্রেম এর সঙ্গা আর মুজিবের দেশপ্রেম এক বিষয় ছিল না। মুজিব হতে পারত জর্জ ওয়াশিংটন, নেলসন মেন্ডেলা বা মহাত্মা গান্ধী। পার্থক্য হলে উপরের তিনজন ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছিলেন, আর মুজিব সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে আজীবন নিজেকে ক্ষমতায় রাখতে বাকশাল কায়েম করলেন। এভাবেই ৭১ এর বিপ্লবের ড্যাশ…. মারা সাড়া হয়ে গেল। কিছু জায়গায় ক্ষিস্তি ছাড়া আমাদের পেটের ভাত হজম হয় না, তাই মুজিবের সে সময়ের স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকে দেশের ড্যাশ… মারার সাথেই তুলনা করলাম।

ভারতীয়রা যেমন মুক্তিযুদ্ধের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কাউকে থাকতে দেয় নাই, মুজিব তেমনি বিপ্লব উত্তর সরকারে মুক্তিযোদ্ধাদের জায়গা দেয় নাই। দেশ সে সময় মুজিব চালাত না, মুজিবের টোকাই পোলা শেখ কামাল আর ভাইয়েরা দেশ চালানো শুরু করেছিল।

সিরাজ শিকদারকে প্রথম গুলি শেখ কামাল এর পিস্তল থেকে করা হয়েছি, সেটাও মুজিবের বাসভবনে, গুলিটি লেগেছিল সিরাজ শিকদার এর হাতে। ভারত সুকৌশলে যোদ্ধাদের হাতে দেশ তুলে না দিয়ে তাদের অনুগত রাজনৈতিক কর্মী যারা ভারতে পাকিস্তানে পালিয়ে ছিল যুদ্ধের সময় তাদের হাতে তুলে দিল।
২৪ এর বিপ্লবের পর ৭১ এর চেয়ে ভিন্ন কিছু হয় নাই। বিপ্লবে আপোষকারী একটি টিম যারা হাসিনার পতন চায় নাই, আওয়ামী গণ মাধ্যম চাইল এদেরকেই মহান করে তুলবে।

সকাল বিকাল রাত ৩ বেলা ৬ বার করে এদের কথা প্ররচার করে মহান বানানো শুরু করল। সেই সাথে, ১৬ বছর ধরে লড়ায় করে নিপীড়নের শিকার হওয়া লড়াকু যোদ্ধাদের ডিফেমিং করতে লাগল। নিপীড়নের শিকার রাজনৈতিক কর্মীদের নাম দেয়া হল ১৬ বছর ধরে না খেয়ে আছে এমন গোষ্ঠী। তাদের নাম দেয়া হল নব্য ফ্যাসিস্ট।

৭১ এ বিপ্লবী আর ২৪ ওর বিপ্লবীদের পরিণতি আলাদা কিছু দেখছি না আমি।
৭১ এর বিপ্লব স্থায়ী হয় নাই, কারন ভারতীয় দালাল রাজনৈতিক কর্মীরা এর দখল নেয় আর যোদ্ধাদের মাইনাস করে সংস্কার প্রক্রিয়ায়।
২৪ এর বিপ্লব উত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ায় বিপ্লবীদের বাদ রেখে সংস্কারও টেকসই হবে না, তার পূর্বাভাস আমরা পাচ্ছি।

সংস্কার কে করবে, পতিত আওয়ামী দোসররা, নাকি বিপ্লবীরা। এই প্রশ্নের উত্তর ছাড়া আমি সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে এই প্রশ্ন করতেই দেব না।
বিধান রঞ্জন রায়, সুপ্রদীপ চাকমা, আলী ইমাম মজুমদাররা কি হাসিনার রিজিমে বেনিফিশিয়ার ছিল না, তারা কি হাসিনার রিজিমে ভিক্টিম কেউ বা হাসিনার বিরুদ্ধে লড়ায়ের কোন যোদ্ধা?
আমি একটা কম্পারেটিভ আলোচনা সামনে আনছি,

প্রথমত, ফরিদ আহমেদ প্রাথমিক গণ শিক্ষা সচীব। সে ৮৪% কোটায় শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল দিল, প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় এর সাথে কথা বলেছিলাম, সে নিজেই সচীবের সাথে এক মত হয়ে এই ৮৪% কোটায় শিক্ষক নিয়োগকে রায় দিয়েছে। আর আইনী মতামতে, আসিফ নজরুল স্যার ৮৪ কোটায় শিক্ষক নিয়োগকে সমর্থন করেছেন।
এবার আসেন এই সেটাপ দিয়ে সরকারের দ্বারা কি শিক্ষা সংস্কার সম্ভব?

দ্বিতীয়ত, একটা তথ্য খুজে বের করলাম, পাসপোর্ট এর ডিজি নুরুল আলম, এডিজি সেলিনা বানু ছাত্র জনতাকে পুড়ায়ে হত্যায় জড়িত আব্দুল্লাহ হিল কাফিকে ৪ ঘন্টার আবেদনে জালিয়াতি করে পাসপোর্ট বানিয়ে দেন। এছাড়া হত্যা মামলার আসামী স্পিকার শিরিন ও তার স্বামীকেও পাসপোর্ট বানিয়ে দেন। অর্ধ ডজন নিউজ হয়েছিল, এডিজি সেলিনা বানু ৭ দিনে সাড়ে ৭ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন প্রবাসীসের পাসপোর্ট দিতে। আমরা প্রেসক্লাবে দুটি প্রতিবাদী প্রোগ্রাম করলাম। এই সব তথ্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে দিতে গেলাম। তিনি আমাদের অভিযোগের রিসিপ্ট কপি দিতে অসীকার করলেন। এখনো বহাল তবিয়াতে এরা। আপনি যদি আমাকে বিশ্বাস করতে বলেন এরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সংস্কার করবে তাহলে আমি বিশ্বাস করব?
তৃতীয়ত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নাকি স্বাচিপের জয়জয়কার। স্বাচিপ হল, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, এটা আওয়ামী লীগের একটি সংগঠন। এই সংগঠন এর নেতা কর্মীরা এখন রঙ পালটিয়ে কিছু ড্যাব এ যুক্ত হয়েছে। পুরো সেক্টর এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণে। মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতালে, একজন চিকিৎসক জুয়েল স্যার, ফিরোজা আপু নার্স। উনাদের টিম গণ অভ্যুত্থানে ছাত্রজনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। আহত ভাইদের চিকিৎসা করেছিল। ফিরোজা আপুকে বদলি করে দিছে, জুয়েল স্যারকে ও এসডি করেছে বর্তমান উপদেষ্টা। এই টিম আমাদের অনেক সহযোদ্ধার চিকিৎসা করিয়েছেন, যার মাঝে ইব্রাহিম নীরব অন্যতম। আমি নিজে তাকে উনাদের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলাম। আমরা শুনতে পারছি বিধান রঞ্জন রায় যেনি আগে হাসিনার আমলে মানসিক হাসপাতালের পরিচালক ছিলেন, তিনি মানসিক হাসপাতাল ছেড়ে উপদেষ্টা হলেও গণ অভ্যুত্থানে অবদান রাখা এই চিকিৎসক নার্সদের অপসারণে ভূমিকা রাখছেন।

এখন প্রশ্ন হল, আমাদেরকে ফারুকি সাহেব, বিধান রঞ্জন রায়, সুপ্রদীপ চাকমা, আলী ইমাম মজুমদারদের করা সংস্কার হজম করতে হবে?
আগে নির্বাচন নাকি আগে সংস্কার, আমি মত দিলাম আগে সংস্কার।
আমাকেও বলেন, আগে সংস্কার নাকি আগে আওয়ামী দোসরদের অপসারণ?
বিপ্লব উত্তর সময়ে আওয়ামী দোসররা এখনো নির্রবাচনকে ভয় দেখাচ্ছে। যে ভাবে আগে ভয় দেখাত যে সুষ্ঠ নির্বাচন হলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে। এখন ঐ ভাষাতেই বলছে, নির্বাচন হলে সংস্কার ব্যাহত হবে।
অনেক বক বক করেছি, আর বেশি কথা বলব না আজ, শুধু বলব- সংস্কার কার হাতে নিরাপদ, জনগনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে সংস্কার নিরাপদ নাকি আলী ইমাম মজুমদার, বিধান রঞ্জন রায়দের হাতে।
ধরলাম আসিফ নজরুল বিপ্লবীদের প্রতিনিধি, এর বাহিরে- স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইনশৃঙ্খলা, জনপ্রশাসন এই চার খাতের আওয়ামী দোসরদের হাত দিয়ে সংস্কার এর তরকারি আমাকে ক্ষেতে বলবেন?
লেখক: রাজনীতিক, ২৪ এর বিপ্লবী

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button