
ভারতের ওড়িশায় আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার। ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, দুপুর পর্যন্ত ওড়িশায় তাণ্ডব চালাবে ফণী। তারপর তা এগোতে থাকবে পশ্চিমবঙ্গের দিকে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
১৯৯৯ সালের ওড়িশার পারাদ্বীপে সুপার সাইক্লোনের পর এই সাইক্লোন ফণীই সব থেকে বেশি শক্তিশালী ও মারাত্মক। ওড়িশায় ওই সাইক্লোনে প্রাণ গিয়েছিল প্রায় ১০ হাজার মানুষের।
গত ৪৩ বছরে বছরের এমন সময় ভারতের সামুদ্রিক অঞ্চলের দিকে এত বড় ঝড় আর ধেয়ে আসেনি। আগেই ভয়াবহ বৃষ্টির সম্ভাবনা জানিয়ে দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার থেকে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে ঝড়ো হাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল সেটা ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ওড়িশার ১১টি জেলা থেকে মানুষকে সরানো চলেছে। পুরী, জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রাপাড়া, ভদ্রক, বালাসোর, ময়ূরভঞ্জ, গজপতি, গঞ্জাম, খুরদা, কটক এবং জাজপুর।
৪০০০ টি শিবিরে রাখা হবে এই বাসিন্দাদের। পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র সৈকতগুলো থেকে সরানো হচ্ছে পর্যটকদের। দিঘা, শঙ্করপুর, মন্দারমনি, তাজপুর- লোক সরানো হচ্ছে সব জায়গা থেকেই।
এই সাইক্লোনের প্রভাব পড়তে পারে কলকাতা, দুই চব্বিশ পরগণা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি ও ঝাড়গ্রাম জেলাতেও। ইতিমধ্যেই কলকাতা বিমান বন্দর বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভূবনেশ্বরের বিমানবন্দর। ঝড়ের আংশিক প্রভাব পড়তে চলেছে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম, বিজয়নগরম এবং বিশাখাপত্তনমেও।
বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ভারতের ওড়িশা উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে দেশটির পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে ঘূর্ণিঝড়টি।
সাগর থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় নিচু এলাকায়গুলোয় স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।