পতাকা ডেস্ক : সরকার ৭ জানুয়ারি একতরফাভাবে পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাম দলের নেতারা। তাঁদের ভাষ্য, এ নির্বাচন দেশকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সংকটের দিকে নিয়ে যাবে। তাঁরা দেশকে ভয়ংকর পরিণতির হাত থেকে বাঁচাতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান।
শুক্রবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেছেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। ‘সভা-সমাবেশের ওপর সংবিধানবিরোধী নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে’ মুখ কালো কাপড় বেঁধে তাঁরা এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকার একতরফাভাবে আগামী ৭ জানুয়ারি পাতানো ‘আমি আর ডামি’ নির্বাচনের আয়োজন করেছে। দেশকে ভয়ংকর এ পরিণতির হাত থেকে বাঁচাতে সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আর নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনী তফসিলে নির্বাচন দিতে হবে। রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে এখনো তা সম্ভব।
আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ না নেওয়া দলগুলোর সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে রুহিন বলেন, দেশে জরুরি অবস্থা ছাড়া এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা সংবিধানবিরোধী।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য দেখানোর জন্য সরকার দলীয় প্রার্থীর বাইরেও নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী, ডামি প্রার্থী, উচ্ছিষ্টভোগী সুবিধাভোগীদের প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। ওই প্রার্থীরা ভোট দিতে না গেলে ভিজিএফ, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতাসহ সামাজিক সুরক্ষা কার্ড বাতিলের হুমকি দিচ্ছেন সাধারণ মানুষকে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম।
সমাবেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সভা-সমাবেশে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদ জানিয়ে ইসির এ সিদ্ধান্ত সংবিধানবিরোধী আখ্যা দেওয়া হয়। নেতারা বলেন, নির্বাচন কমিশন ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ না নেওয়া দলগুলোর সভা-সমাবেশ, মিছিলের মতো গণতান্ত্রিক কর্মসূচি করতে না দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে নেতারা সরকারের ‘অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও তামাশার নির্বাচনের’ বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ মার্ক্সবাদীর নেতা জয়দীপ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলীসহ অনেকে।