sliderস্থানীয়

এসএমপি ট্রাফিকের দুই ক্ষমতাধর সার্জেন্ট! তোয়াক্কা করেননা ডিসিদের

সিলেট প্রতিনিধি: সিলেট এসএমপি ট্রাফিক পুলিশের প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর দুই সার্জেন্ট হচ্ছেন আবু বক্কর শাওন ও নুরুল ইসলাম। দুজনই ট্রাফিক বিভাগের ডিসির চেয়ে ক্ষমতা রাখেন সব সময়। দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে এসএমপিতে ঘাপটি মেরে কর্মরত রয়েছেন।

সার্জেন্ট আবু বকর শাওন আগাগোড়া একজন ছাত্রলীগের কর্মী। এসএমপির দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বাসিন্ধা শাওন ছিলেন বর্তমানে নিষিদ্ধ সংঘটন ছাত্রলীগের সিলেট ল’ কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি। সে সুবাধে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদুস সামাদের বিশেষ সুপারিশে আওয়ামী লীগের আমলেই চাকরি পেয়ে যান। চাকরি জীবনের বেশীর ভাগ সময়ই তিনি এমএসপির ট্রাফিক বিভাগে দাপটের সাথে চাকরি করছেন। তিনি ছিলেন এসএমপি ট্রাফিক বিভাগের ক্যাশিয়ার। এ বিভাগে যত ঘুষ দূর্নীতির টাকা আসতো সবই শাওনের হাতে আসতো। মাস শেষে পর্যাদা অনুসারে বন্টন করা হতো। ট্রাফিকের ডিসি ছিলেন তার নিজ এলাকার বাসিন্দা বর্তমানে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসাবে পদোন্নতি প্রাপ্ত ফয়সল মাহমুদ। সে সময় থেকে সার্জেন্ট শাওন হয়ে উঠেন বেপরোয়া। সিলেটে বাড়ী হওয়ায় সু-সম্পর্ক থাকায় তার দাপটের কাছে সাবেক অনেক ডিসিও ছিলেন অনেক অসহায়। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার আমলে সিলেট ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবের নামের প্রভাব বিস্তার করে কামিয়েছেন কোটি- কোটি টাকা। এসএমপিতে থেকেই শাওন বিভিন্ন অসৎ উপায় অবলম্বন করে সিলেট নগরীর বালুচর এলাকায় গড়ে তুলেছেন বিশাল ভবন গড়ে তুলেছেন। নামে বেনামে রয়েছে সম্পদ ও বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে জমা রয়েছে বিশাল অঙ্কের টাকা।

বর্তমানে এসএমপির রেকার বাণিজ্য, টোকেন বাণিজ্য, মামলা বাণিজ্য, স্ট্যান্ড বাণিজ্য সবই হয়ে থাকে প্রভাবশালী সার্জেন শাওন এবং নুরুলের মাধ্যমে।

দুইজনের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে সংশ্লিষ্ট শাখার ডিসিদের কাছে অনেক অভিযোগ জমা হলেও দলীয় প্রভাবের কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেননি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। বিগত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরও শাওন-নুরুল রয়েছেন বহাল তবিয়তে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার একটি আন্দোলনের একটি মামলায় শাওন ছিলেন ১৫৩ নম্বর আসামীর তালিকায়। যে মামলাটি সিলেট কতোয়ালী থানায় পরে দায়ের করেন বাদী। কিন্তু টাকার বিনিময়ে বাদীর সাথে আপোষ রফা করে উক্ত মামলা থেকে শাওন রেহাই পেয়ে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেই মামলার এজাহারের কপিগুলো এ প্রতিবেদকের কাছে এসেছে।

সম্প্রতি সময়ে একাধিক বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্ম দেয়ার পাশাপশি আগের মতো ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাচ্ছেন দুই গুনধর সার্জেন। অভিযোগ রয়েছে ডিসি ট্রাফিক শাখার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোন নির্দেশনাই পালন করেন না তারা। চলেন নিজেদের মতো করে। কিন্তু তবুও তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ভয় পান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সদস্য জানান, এই বিভাগে ডিসি-এডিসি কিছু করতে হলে শাওন-নুরুলকে তোষামোদ করে করতে হয়। সরাসরি কোন নির্দেশনা দিলে এতে বিরক্ত হন এই দুই সার্জেন্ট। এদিকে বর্তমান এসএমপি কমিশনার যোগদানের পর অনেক বিতকৃত পুলিশ সদস্যকে অন্যত্র বদলী করা হলেও ট্রাফিক শাখার এই দুই প্রভাবশালী সার্জেন্ট রয়ে গেছেন বহাল অবস্থায়। সম্প্রতি সময়ে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকদের সাথে তাদের আইনের অপব্যবহার করা নিয়ে দুজন এসেছেন বেশ আলোচনায়। কারণ তাদের নাকি নিজস্ব কিছু সাংবাদিক রয়েছে। তাদের বাহিরে তারা অন্য সাংবাদিকদের সাথে এ রকম আচরণ প্রায়ই করে থাকেন। ট্রাফিক শাখার সকল পুলিশ সদস্য শাওন ও নুরুলের কথামতো চলতে হয়। এ দুজনের মতামতেই ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব বষ্টন করা হয় বলে বিশ্বস্থ সূত্র নিশ্চিত করে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button