দেশে পরিবর্তন এলেই, একদল দুরবিন হাতে মইয়ের উঁচু ধাপে উঠে যায়। খোঁজে, হালুয়া রুটি কার হাতে ! সাতাত্তর থেকে এরকমটাই। এরশাদ আমল এবং ওয়ান এলেভেন-এ এটা ব্যাপক চোখে পড়ে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী। এদের মধ্যে অগ্রগামী, জাতীয় সুবিধাবাদী দল। এরশাদের গৃহপালিত পশু’র মধ্য দিয়ে যে যাত্রা, তা এখনও চলমান। পরিবর্তন আসলেই তাদের মস্তিষ্কের সঞ্চালন বেড়ে যায়।
রাজনীতির ব্যর্থতা থেকে নৈরাজ্য সংস্কৃতি’র বৃত্তে এরা ঘুরপাক খাচ্ছে। অতীত মুখী এরা। মস্কোয় বৃষ্টি হলে এখানে যারা ছাতা মেলে ধরে, তারা-ও একই রকম। মাওবাদীদের অর্ধেক ধর্মীয় মৌলবাদীদের সাথে, এক সাথে। এরাও আগের দুই দলের মতোই। এদের দুরবিন হাতে মইয়ের শেষধাপে !
রাজনীতি বা সমাজে এদের কোন অবস্থান না থাকায়। এরা রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। মুখে যতই গণতন্ত্রের গীত করুক না কেন, গণতন্ত্র হত্যায় সবসময় নানা ফন্দি আঁটে !
এরা জানে, বড় দুইদল রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলে এদের ভাত নাই। তাই জাতির ক্রান্তিলগ্নে কেউ অবতার হয়ে আসে, তাঁকে প্রলুব্ধ করে। প্রলুব্ধ করে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চালু করার। এবং অবতার-কে এক সময় স্বৈরাচারের পথে নিয়ে যায়।
বড় দলগুলো-ও ক্ষমতার বাইরে থাকার সময় গণতন্ত্র, গণতন্ত্র বলে আকাশ অন্ধকার করে ফেলে। এবং জনগণের ঘাড়ে পারা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পরই, স্বৈরাচার রূপে আবির্ভূত হয়। দেশে সব দরজা, জানালা বন্ধ করে দেয়। যাতে নিরমল বা মানবিক বাতাস ঢুকতে না পারে। জনগণকে আবারও রাস্তায় নামতে হয়। আবার-ও তৃতীয় পক্ষ !
রাজনীতির এই বেড়াল – ইদুর খেলার অবসান করতে হবে। রাজনীতি হবে মানুষের জন্য। আগামী প্রজন্মের জন্য। দেশের আর্থসামাজিক এবং মানবিক উন্নয়নের জন্য।
সকলের মাথায় রাখতে দেশ স্বাধীন হয়েছে অর্ধ শতাব্দীর উপর হয়ে গেছে। আর পরীক্ষা নিরীক্ষা নয়। স্থিতিশীলতা আনতে হবে।
দেশের আর্থিক বুনিয়াদ শক্তিশালী না হলে এবং স্থিতিশীলতা না থাকলেই বাইরের শক্তি নাক গলায়। অনাহুত’র মতো জ্ঞান দেয়। একসময় ভাব এমন হয়, কথা না শুনলেই বেয়াদব ছেলে। শাস্তি দিতে হবে !
বন্ধু হবে, সমমর্যাদা দিয়ে। অভিভাবক নয়। আমার দেশের সুখেদুঃখে পাশে থাকাই হচ্ছে, বন্ধু। কোন ব্যক্তি বা একক দলের সাথে নয়।
দল,মত, ধর্ম, বর্ণ, পারষ্পরিক ঘৃণা ভুলে যেতে হবে। সবাই-ই ঐক্যবদ্ধ ভাবে, ” এক নতুন বাংলাদেশ গড়বো আমরা ”
লেখক, শাহীন রাজা,সিনিয়র সাংবাদিক