অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আমরা আশা করি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফুল স্কেলে বিচার কাজ মাস খানেকের মধ্যে শুরু হয়ে যাবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হয়ে যাবে।
বুধবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিচার বিভাগের যে সকল সমস্যা হচ্ছে এবং আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে যে সমস্ত ক্ষেত্রে আরো সহযোগিতার প্রয়োজন সে সব বিষয়ে কথা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘ছাত্র-জনতা যারা আন্দোলন করেছিল। জুলাই বিপ্লব করেছিল তারা মনে করছে যে- কোনো কোনো জাজ (বিচারপতি) যারা ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং যারা ছাত্র আন্দোলনের প্রতিপক্ষ ছিল তাদের হয়ে কাজ করেছে দিনের পর দিন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছে। আগেও সড়ক আন্দোলনসহ যে আন্দোলনগুলো হয়েছিল সেখানেও তাদের ভূমিকা ছিল ফ্যাসিস্ট শক্তির পক্ষে ও দেশের গণতন্ত্রকামি ও মানবাধিকার প্রত্যাশী মানুষের বিপক্ষে। তাই তারা (ছাত্র-আন্দোলনকারীরা) এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছে। সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সর্বোচ্চ আদালতে যারা অভিভাবক আছেন তারা যথেষ্ট জ্ঞানী ও যথেষ্ট রেসপেক্টেড। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তারা কী ব্যবস্থা নেবেন, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে অনেক কিছু ব্যবস্থা নেয়ার (স্কোপ) সুযোগ আছে। সেটা ওনারা বিবেচনা করবেন। এক্ষেত্রে আমরা কিছু বলে দিতে পারি না।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে আজ একটা বড় অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাইকোর্টে ২৩ অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ হয়েছে। এতদিন ট্রাইব্যুনালের জন্য জাজ চাইলে তখন সুপ্রিম কোর্ট থেকে বলা হত যে- আমাদের জাজের অনেক সঙ্কট রয়েছে। এখন আশা করি, এই সঙ্কটটা অনেকটাই দূর হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে এখন বিচারক নিয়োগ হয়ে গেলে কাজটার একটা ধাপ শুরু হবে। যদিও ট্রাইব্যুনালের কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে উল্লেখ করে ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের যে প্রসিকিউশন টিম আছে তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি, ফুল স্কেলে বিচার কাজ হয়তো মাস খানেকের মধ্যে শুরু হয়ে যাবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সম্ভবত ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হয়ে যাবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোথায় আছেন সে প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা বলেন, উনি (শেখ হাসিনা) কোথায় আছে সেটা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নাই। আমার মাথা ব্যথা হচ্ছে বিচার কার্যটা করা। উনি কোথায় আছে সেটা আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখবে। আমার কথা হচ্ছে যদি বিচার কার্যের কোনো একটা স্টেজে উনার বা অন্য কারো যদি প্রত্যর্পণ (এক্সট্রাডিশন) প্রয়োজন হয় তখন আমি খোঁজ করব। আমার কাজ হচ্ছে বিচারটা যত দ্রুত সম্ভব শুরু করা এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা বিচার হয়েছে বলে স্ট্যাবলিস করা।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। গতকাল আইন উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তার সাথে ছিলেন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
সূত্র : বাসস