sliderবিবিধশিরোনাম

একপেশে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আ.লীগ: যুক্তরাষ্ট্র

আওয়ামী লীগ সরকার একপেশে নির্বাচন করে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রতিবেদন ২০১৮’ এ তথ্য উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। দেশটির জাতীয় নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়ম হয়েছে। এসবের মধ্যে ভরা ব্যালট বাক্স, বিরোধী দলের পোলিং এজেন্ট এবং ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে নির্বাচন পূর্ববর্তী পরিস্থিতি তুলে ধরে বলা হয়েছে, নির্বাচনের আগে হয়রানি, হুমকি, গণ গ্রেপ্তারও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে৷ যার কারণে অনেক বিরোধী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের জন্য বৈঠক, জনসভা, কিংবা স্বাধীনভাবে প্রচার চালানো কঠিন ছিল৷
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীদের প্রয়োজনীয় সময়ের মধ্যে অনুমতি ও ভিসা প্রদান করা হয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে প্রতিবেদনে৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২২টি ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ এনজিওর মধ্যে মাত্র সাতটিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রতিবেদনটি তৈরি করতে তারা এনজিও ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনালের পরিসংখ্যানের সাহায্য নিয়েছে। এই পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনের মাসে বিএনপি ও তার রাজনৈতিক জোটের বিরুদ্ধে মোট ১৩২৪ টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে৷ যেখানে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এমন ঘটনা ঘটেছে ২১১ টি৷ এছাড়া নির্বাচনকালীন সময়ে প্রায় ৪,৩৫,০০০ বিএনপি সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ৷ যাদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ এসব মামলার অনেকগুলোর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হিসেবে অভিহিত করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো৷
এদিকে চলতি মাসের গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে বাংলাদেশে জামায়াতের নেতা কর্মীদের মত প্রকাশের সাংবিধানিক স্বাধীনতা প্রয়োগ করতে দেয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করা হয়েছে৷ অভিযোগে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে নিবন্ধনের সুযোগ না দেয়া, জামায়াতের নামে অফিস খুলতে না দেয়া সেই সঙ্গে নেতা ও সদস্যদের মত প্রকাশ ও সংগঠিত হওয়ার অধিকার ক্রমাগত হরণ করা হচ্ছে৷
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গণমাধ্যমেও সরকার হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গণমাধ্যম প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব গণমাধ্যম সরকার ও আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তাদেরকে হয়রানি করছে সরকার৷ বিজ্ঞাপন থেকে তাদের আয়ের পথ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে৷ গণমাধ্যমগুলো সরকারের প্রতিক্রিয়া এড়াতে ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’ আরোপ করছে বলেও উল্লেখ করা হয়৷
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওই প্রতিবেদনে৷ বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নির্যাতনের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে৷ কিন্তু সরকার মাত্র অল্প কয়েকটি নির্যাতন ও হত্যার ঘটনার তদন্ত ও বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে৷
সূত্র: ডি ডব্লিউ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button