sliderখেলাশিরোনাম

ইতিহাস গড়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা

পারলেন না মাশরাফী, পারলো না সিলেট; ইতিহাস গড়লো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, মহানায়ক হয়ে উঠলেন ইমরুল কায়েস। ‘উইন অর উইন’ স্লোগান যেন সত্য হলো। পরপর দুটি শিরোপা কুমিল্লার ঘরে গেলো। ২০২৩ বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ফলে বিপিএলে সর্বোচ্চ চারবার শিরোপা জিতলো তারা। টানা ১১ ম্যাচে জয় নিয়ে জিতো নিলো শিরোপা।

বৃহস্পতিবার ১৭৬ রানের লক্ষ্যে মাঠে নেমে লিটন দাস ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন, তার ওপর দাঁড়িয়েই জনসন চার্লস জয়টা ছিনিয়ে আনলেন। তার ৫২ বলে অপরাজিত ৭৯ রানের ইনিংসেই শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে কুমিল্লার। বিপরীতে যেই রুবেল স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, স্বপ্ন ভাঙলেন তিনিই। প্রথমে চার্লসের সহজ ক্যাচ মিস আর শেষ দিকে এসে ১ ওভারে ২৩ রান দিয়ে সিলেটকে শিরোপা থেকে ছিটকে দিয়েছেন।

এর আগে সিলেটের দেয়া ১৭৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দ্বিতীয় ওভারেই তানজিম সাকিবের উপর চড়াও হন সুনিল নারিন ও লিটন দাস। সেই ওভারে আসে ২০ রান। দুজনের জুটি ভাঙে ২.২ ওভারে সুনিল নারিন ৫ বলে ১০ করে ফিরলে। দ্রুত ফেরেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও, মাত্র ২ রান আসে তার ব্যাটে।

জোড়া উইকেট হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে তোলেন চার্লস ও লিটন দাস মিলে। যদিও জুটিটা থেমে যেতো ভয়ের কারণ হয়ে উঠার আগেই, তবে রুবেল হোসেন চার্লসের ক্যাচটা বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও হাতে জমাতে পারেননি। অবশেষে দুজনের জুটি যখন ভাঙে ততক্ষণে, সমীকরণটা সহজ হয়ে আসে। শেষ ৭ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৭১ রান।

৫৯ বলে ৭০ রানের জুটি ভাঙে লিটন দাসের বিদায়ে, আউট হবার আগে অবশ্য তুলে নেন এবারে বিপিএলে নিজের তৃতীয় ফিফটি; ৩৯ বলে ৫৫ রান করে রুবেলের শিকার হন এই ব্যাটার। তবে তখনো নীরবে খেলে যাচ্ছিলেন জনসন চার্লস, ১৬ ওভার শেষে তার ব্যাটে ছিল ৩১ বলে মোটে ৩৪ রান। কিছুটা চাপে পড়ে যায় কুমিল্লাও, একটা সময় প্রয়োজন ছিল ২৪ বলে ৫২ রান।

তবে এই সময়েই জ্বলে উঠেন চার্লস, মইন আলির সাথে মিলে রুবেল হোসেনের এক ওভারেই আদায় করেন ২৩ রান। সেই সাথে তুলে নেন এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম ফিফটিও। শেষ পর্যন্ত মইন আলির সাথে ঝড়ো ৪১ বলে ৭২ রানেত জুটি গড়ে জয় নিশ্চিত করেন তিনিই। মইন অপরাজিত ছিলেন ১৭ বলে ২৪ রানে। তবে মাঠে থাকলেও এইদিন বল হাতে দেখা যায়নি মাশরাফীকে।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সিলেট স্ট্রাইকার্স থামে ৭ উইকেটে ১৭৫ রানে। এইদিন ব্যাট হাতে একত্রে জ্বলে উঠেন মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্ত ৪৫ বলে ৬৪ রান করে আউট হলেও ৫ চার আর ৩ ছক্কায় ৪৮ বলে ৭৪ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিকুর রহিম।

শুরুতেই তানভীর ইসলামের তোপের মুখে পড়ে সিলেট। নিজের প্রথম ওভারেই তানভীর ০ রানে ফেরান আসরের অন্যতম সেরা ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়কে। পরের ওভারেই ১ রান করে আন্দ্রে রাসেলের শিকার হন মাশরাফী। ফলে মাত্র ২৬ রানেই ২ উইকেট হারায় তারা। চিন্তার ভাঁজ দেখা দেয় সিলেটবাসীর কপালে।

তবে বড় মঞ্চ পেয়ে জ্বলে উঠলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তুলে নেন চলতি বিপিএলের চতুর্থ অর্ধশতক। এর আগেই অবশ্য প্রথম বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে এক আসরে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। সেই সাথে মুশফিককে সাথে নিয়ে গড়ে দিয়ে যান বড় সংগ্রহের ভিত্তি। দুজনের ৫৬ বলে ৭৮ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের স্বপ্নই দেখতে থাকে সিলেট।

শান্ত ৬৪ রান করে ফিরলেও নিজের কাজটা চালিয়ে যেতে থাকেন মুশফিকুর রহিম। ৩৫ বলে তুলে নেন এবারের বিপিএলে নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতক। তবে অপরপ্রান্তে চলতে থাকে আসা যাওয়ার মিছিল। ১১ বলে ১৩ রান করে ফিরেন রায়ান বার্ল, জ্বলে উঠতে পারেননি থিসারা পেরেরাও; গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরেন তিনি। পরপর দুই বলে দুইবার জীবন পেয়েও ব্যর্থ হন জর্জে লিন্ডে, ৬ বলে ৯ রান আসে তার ব্যাটে।

শেষ ওভারে মইন আলির দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউটের শিকার হয়ে ফেরেন জাকির হাসান। তবে মুশফিকুর রহিমকে আউট করতে পারেননি কেউ, ৪৭ বলে ৭৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। সেই সাথে তার দল সিলেট থামে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রানে। ৩১ রানে ২ উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজুর রহমান। একটি করে উইকেট নেন তানভীর ইসলাম, সুনিল নারিন, মইন আলি ও আন্দ্রে রাসেল।
নয়া দিগন্ত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button