sliderমতামতশিরোনাম

আলোর হাতুড়ি হাতে ড. ইউনুস

শাহীন রেজা :দেশ এখন ৭ নভেম্বর পূর্ব এবং পরবর্তী পরিস্থিতি চলছে। ৭ নভেম্বরে পরাজিতদের মতোই ! দেশকে অস্থিতিশীল করতে সকল আয়োজন। আমাদের বন্ধু প্রতিম, ঐ সময় দেশকে অস্থিতিশীল করতে তৎপর ছিল। এখন-ও তেমনটাই।

জেনারেল জিয়ার শক্তিশালী নেতৃত্ব, সেই সময় অরাজকতা দেশকে রক্ষা করেন। ড. ইউনুসকে-ও তেমন ভূমিকা নিতে হবে। ইউনুস সাহেবের প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে, তাঁর সাথে আছে বিশাল যুব সমাজ। এবং দেশের আপামর জনগোষ্ঠী।
এই ভয়াবহ বন্যায় বন্যার্তদের পাশে আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাশে দাড়িয়েছে। দেশের মানুষ ড. ইউনুসের নেতৃত্বের প্রতি আকুন্ঠ সমর্থন। বা বিশ্বাসেরই প্রতিচ্ছবি। ড. ইউনুসের নেতৃত্বের প্রতি জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।

আজ থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে। ৭ নভেম্বর সিপাহী, জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জাতি নতুন আলো দেখতে পায়। সে সময় একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে সবাই স্বাগত জানায়। এমনকি “বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি” (সিপিবি) জিয়াউর রহমানের খাল কাটা কর্মসূচিকে সমর্থন দিয়ে পাশে এসে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের নতুন যাত্রা শুরু হয়।

প্রায় পঞ্চাশ বছর পর আবারও আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র, জনতা এবং সেনাবাহিনী ঐক্যবদ্ধ হয়ে পনেরো বছরের দুঃশাসনের অবসান ঘটায়।

পঞ্চাশ বছর পূর্বে আমাদের বন্ধু প্রতিম, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আদা-জল খেয়ে নামে। এবার-ও তাই। ঐ সময়, আওয়ামী লীগের একটা তরুণ অংশকে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে অবস্থিত করা। এরপর বাংলাদেশকে মরুকরণ করতে বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেয়। এবং শান্তি বাহিনী সৃষ্টির মধ্য দিয়ে আমাদের পাহাড়ি এলাকা অস্থির করে তোলে। পাহাড়ি এবং সমতল ভূমির লোকদের মুখোমুখি পর্যায়ে নিয়ে। চলে দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এই সংঘর্ষ বন্ধ হলেও দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে এক অবিশ্বাস জন্ম নেয়। তা আজও চলছে।

এবার-ও একই কর্মকান্ড। পরিবর্তিত বিশ্বের কারণে ধরন কিছুটা পাল্টেছে। বন্ধু প্রতিমের সংবাদ মাধ্যমে সরাসরি বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণায় সোচ্চার হয়ে ওঠে। সামাজিক মাধ্যম-ও পিছিয়ে নেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ বিরোধী নেতিবাচক প্রচারণা চালায়।

৫ আগষ্টের পর দেশে ডাকাতি বেড়ে যাওয়া, আনসার বাহিনী’র নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা। এর পেছনে বন্ধু প্রতিমের হাত আছে বলে, দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী এই ধারণা পোষণ করে !

বেশ ক’বছর আগের ঘটনা। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ‘চিলি’। আলেন্দে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিপ্লবী সরকার গঠন করে। যা সাম্রাজ্যবাদী সরকারের পছন্দ ছিল না। আলেন্দে সরকারকে ফেলে দেয়ার নানা ষড়যন্ত্র করে। সেই সময় আমেরিকান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন সিআইএকে নির্দেশ দেয়, ‘”make the economy scream”। চিলি’র অর্থনীতিতে হাহাকার এনে দাও! এবং চিলি’র প্রচার মাধ্যম সাম্রাজ্যবাদী’র পক্ষ হয়ে কাজ করে, সেইসময় ।

একটা উদহারন দিলেই বুঝবেন,আলেন্দের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি কি ধরনের ষড়যন্ত্র করেছিল। “চিলি’তে ঐ সময় পরিবহন ধর্মঘট হয়। আলেন্দে সরকার সেনাবাহিনীর সদস্যদের দিয়ে পরিবহন ব্যবস্থা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এবং তা কার্যকর করে। দু-একদিন যেতে না কে বা কাহারা গাড়ির ইঞ্জিন সড়িয়ে ফেলে” এইভাবেই আলেন্দে সরকারের বিরোধিতা করে। তবে এই কাজগুলো চিলি’র দেশ বিরোধী মানুষ দিয়েই ঘটিয়েছিল!

পুরানো প্যাঁচাল পাড়ার একটা-ই উদ্দেশ্য হলো, আমাদের সতর্ক থাকতে। বন্ধু প্রতিম-ও আমাদের জ্বলে ওঠা সূর্যটাকে মেঘের আড়ালে ঢেকে দিতে সকল ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখবে।

লেখক, সিনিয়র সাংবাদিক

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button