
১৯৮৪ সালের ১০ এপ্রিল। যশোরের কোতয়ালী থানা চত্বরের চৌরাস্তায় মঞ্চ সাজানো হয় সদ্য কারামুক্ত কমরেড গোলাম মাজেদকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য। বিকেলে দু:সংবাদ আসে তিনি ৪টা ৩৫ মিনিটে সদর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন! অর্থাৎ সংবর্ধনামঞ্চে জীবিত গোলাম মাজেদ নয়, এল তাঁর মরদেহ। সেদিন স্বামীর মৃতদেহ সামনে রেখে দৈনিক রানার-এর প্রকাশক রাবেয়া খাতুন বলেছিলেন, স্বৈরাচার সরকার পরিকল্পিতভাবে সাংবাদিক গোলাম মাজেদকে হত্যা করেছে। তিনি এর বিচার চেয়েছিলেন জনতার কাছে। যশোরের ছাত্র-জনতা সেদিন শপথ নিয়েছিলেন খুনী এরশাদ উৎখাত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার। ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতন ঘটলে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিল যশোরের মানুষ। পরেরদিন রানারের হেডপিস ছাপা হয় নিচে, উল্টোভাবে। আর ওপরে হেডপিসের স্থানে ছাপা লীড নিউজের শিরোনাম ছিল, ‘গোলাম মাজেদের খুনী এরশাদ শাহীর পতন’।
আজ ১০ এপ্রিল সাহসী সাংবাদিক, আপোসহীন রাজনীতিবিদ, প্রগতিশীল সাহিত্যিক ও সিংহপুরুষ হিসেবে খ্যাত কমরেড গোলাম মাজেদের ৩৮তম হত্যাবার্ষিকী! মৃত্যুবার্ষিকীর স্থলে হত্যাবার্ষিকী বলছি এই কারণে যে, তাঁকে স্বৈরশাসনামলে দুবার গ্রেফতার করে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল, যার ফলে দ্বিতীয়বার কারামুক্তির ৫ দিনের মাথায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। কমরেড গোলাম মাজেদকে লাল স্যালুট।
শ্রদ্ধেয় গোলাম মাজেদ ভাই আমার সাংবাদিকতা ও ওপেন পলেটিক্সের গুরু। সাহিত্য চর্চাতেও প্রেরণাদাতা। তাঁকে আমি কখনো কমরেড, কখনো গুরু, আবার কখনো মাজেদ ভাই বলে ডাকতাম। তাঁর সাথে আমার একটি স্মরণীয় স্মৃতি রয়েছে, যা উল্লেখ না করে পারছি না।
১৯৮১ সালের ১১ জানুয়ারি। শীতের সকাল। যশোরের বেজপাড়ায় কমরেড মাজেদ ভাইয়ের সাথে নাস্তা করছিলাম। হঠাৎই তিনি বললেন- ‘তুমি কি জানো, আজকের রাতটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?’ আমি বললাম- ‘হ্যাঁ জানি, আজ দিবাগত রাতেই মাস্টারদা সূর্য সেনকে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল!’ মাজেদ ভাই বললেন, ‘বাহ্, ভালইতো বলেছো! মৃত্যুদণ্ডের বদলে ‘হত্যা’ বলে তুমি সকল সংগ্রামী কমরেডকে সম্মান করেছো। তোমাকে ধন্যবাদ। তবে তুমি একটা কাজ করতে পারো, তাঁর ওপর কবিতা লিখতে পারো।’
যেই বলা সেই কাজ। নাস্তা শেষে বসে গেলাম কাগজ-কলম নিয়ে। আগের রাতেই মাস্টারদার কারাগারের চিঠিটি পড়েছি, যা তিনি ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে লিখেছিলেন। সেই চিঠিকে কেন্দ্র করেই একটি কবিতা লিখে ফেললাম। নাম দিলাম, ‘মাস্টারদার শেষ চিঠি’। কবিতাটি পড়ে মাজেদ ভাই আমাকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুম্বন দিয়ে বলেছিলেন, ‘বাহ্, খুব সুন্দর হয়েছে, আমার পত্রিকায় ছেপে দিব।’ কেবল দৈনিক রানার-এ নয়, পরে দৈনিক ঠিকানা ও সাপ্তাহিক দেশহিতৈষীতেও কবিতাটি ছাপা হয় এবং আরো পরে ১৯৯৫ সালের পয়লা বৈশাখে আমার কাব্যগ্রন্থ ‘বেদনার বৃষ্টিতে’ও তা স্থান পায়।
বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা একটি নাম গোলাম মাজেদ। তিনিই প্রথম বরেণ্য বাঙ্গালী, যাঁর ছবি বিশ্বের বরণীয় সাংবাদিকদের তালিকায় স্থান পেয়েছে। যশোরের চৌগাছা উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের প্রখ্যাত মিয়া বাড়ির বংশধর গোলাম মাজেদ ১৯২৮ সালের ১ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের আন্দুলিয়া গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুর রউফ ছিলেন একাধারে পণ্ডিত, শিক্ষক, সাহিত্যিক, সমাজসেবক ও গবেষক। তাঁর পিতামহ খানসাহেব আব্দুল আজিজ ছিলেন অবিভক্ত বাংলায় (যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া ও বনগাঁ এলাকা) আইন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য (MLC)।
মাত্র দেড় বছর বয়সে ১৯৩০ সালে গোলাম মাজেদের মাতৃবিয়োগ ঘটে। এরপর তিনি তাঁর বড় চাচী, ফুপুসহ অন্যান্যদের স্নেহে যত্নে বড় হতে থাকেন। ৭ ভাই ও ৫ বোনের মধ্যে গোলাম মাজেদ ছিলেন সবার বড়। তাঁর বৈবাহিক জীবন শুরু হয় যশোরের পুলেরহাট এলাকার মেয়ে রাবেয়া খাতুনের সাথে। তিনি ৪ পুত্র ও ৫ কন্যা সন্তানের জনক। বড় পুত্র সাইফুল আলম মুকুলও ছিলেন পিতার মত একজন নির্ভীক সাংবাদিক। পিতার পথ অনুসরণ করতে গিয়ে তাঁকেও জীবন দিতে হয়েছে ১৯৯৮ সালে আততায়ীর শক্তিশালি বোমার আঘাতে। মেঝ কন্যা ২০০১ সালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। সেজপুত্র মনজুরুল আলম টুটুলও রানার পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসীদের ষড়যন্ত্রে নিহত হন। বর্তমানে তাঁর ৪ ছেলের মধ্যে মেজছেলে দীপু আলমই কেবল জীবিত রয়েছেন।
পারিবারিক কারণে কমরেড গোলাম মাজেদের শৈশব ও কৈশোরের এক বিরাট অংশ অবিভক্ত বাংলার রাজধানী কলকাতায় অতিবাহিত হয়। ৩৯/১ কলিন স্ট্রিট ছিল তাঁর পিতার আবাসস্থল। কলকাতা হেরার স্কুলে তিনি নবম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যায়ন করেন। ১৯৪২ সালে তিনি সকলের অজ্ঞাতে গৃহত্যাগ করেন এবং পরবর্তী দুই বছর গোটা ভারত পরিভ্রমণ করেন। ১৯৪৪ সালে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে অনিয়মিত ছাত্র হিসাবে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়ে ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৪৫ সালে সিভিল সাপ্লাইয়ের চাকরিতে যোগদানের মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর কর্মজীবন। ১৯৫৪ সালে সিভিল সাপ্লাই অবলুপ্ত হবার পর ১৯৫৬ সালে তিনি খাদ্য বিভাগের চাকরিতে যোগদান করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি সার্কেল অফিসার (রাজস্ব) হিসাবে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং ১৯৬৮ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন।
গোলাম মাজেদ চাকরিজীবনের ব্যস্ততার মাঝেও নিয়মিত সাহিত্যচর্চা করতেন। গল্প, কবিতা, রম্য ও প্রহসন রচনায় তিনি ছিলেন যথেষ্ঠ সাবলীল। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থেসংখ্যা ১০। বেশ কয়েকটি অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি ছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায়ও তাঁর অবদান রয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ হচ্ছে- বাঁকা চোখে, অন্ধস্নেহ, সপ্তক, অজ্ঞতাবাদ ভাওতা, পার্থিব, হ-য-ব-র-ল, তরুণীচোর, আহা জয় বাংলা ও ভিন্ন দৃষ্টি। কমরেড মাজেদের ছিল বিজ্ঞানমনস্ক অনুসন্ধানী দৃষ্টি। গভীর অনুসন্ধিৎসা নিয়ে ষাটের দশকের প্রথম দিকে তিনি মৌলিক বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করেন এবং শব্দতরঙ্গ, আলোর গতি, দূরদর্শন প্রভৃতি বিষয়ে মৌলিক গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ রচনা করেন, যা তখন নোবেলজয়ী পাকিস্তানী পদার্থবিদ ও বৈজ্ঞানিক আবদুস সালাম কর্তৃক ব্যাপকভাবে প্রশংশিত হয়।
চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এ সময়ে তিনি স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি শুরু করেন। অবশেষে তিনি নিজস্ব মালিকানায় পত্রিকা প্রকাশনার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৭৮ সালের ১৬ জুলাই সাপ্তাহিক ‘গণমানস’ এর মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর সাংবাদিক জীবন। নিজস্ব প্রকাশনাকে আরও ব্যাপক কারার লক্ষ্যে ১৯৮০ সালের ২৬ মার্চ থেকে দৈনিক রানার এর প্রকাশনা শুরু করেন। পত্রিকাটি উদ্বোধন করেছিলেন তাঁর বন্ধু বিশিষ্ট সাহিত্যিক হোসেনউদ্দীন হোসেন। কমরেড গোলাম মাজেদ ছিলেন সার্থক কলম সৈনিক। সাংবাদিক হিসাবে তাঁর প্রধান লক্ষ্য ছিল সমাজ ও প্রশাসনের যাবতীয় দুর্নীতি, অব্যবস্থা, অনৈতিকতা, কূসংস্কার, কূপমণ্ডুকতার বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ এবং সুষ্ঠ ও ইতিবাচক সমাজ রাজনীতি গড়ে তোলা। স্বীয় লক্ষ্যে তিনি ছিলেন অবিচল, অনমনীয় ও আপোসহীন। সততা ও স্পষ্টবাদিতাই ছিল তাঁর চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
তাঁর বলিষ্ঠ সম্পাদনায় দৈনিক রানার হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। সমাজের সকল প্রকার অনাচার, প্রশাসনিক দুর্নীতি, ধর্মীয় গোঁড়ামী, সন্ত্রাস, ধর্ষণ প্রভৃতি অপরাধমূলক কাজ, তাদের হোতা এবং পৃষ্ঠপোষক মহলের বিরুদ্ধে সব সময় প্রতিবাদমুখর ছিলেন তিনি। সামরিক আইন যে কোনদিন জনগণের কল্যাণ বয়ে আনে না, তা দৃঢ়তার সঙ্গে তুলে ধরেছিলেন তিনি তাঁর পত্রিকায়। ফলে সামরিক শাসক লে.জে এরশাদের বিরাগভাজন হন এবং ফলশ্রুতিতে তাঁকে হতে হয় কারাবন্দী।
১৯৮০ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে রানারের প্রথম সংখ্যায় প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শহীদ গোলাম মাজেদ লিখেছিলেন, ‘২৬ মার্চ সাহসী ইতিহাস সৃষ্টির দিন।’ সেই সাহস তিনি দেখান ১৯৮২ সালের ২৬ মার্চ সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম প্রতিবাদ করে। তখন তিনি লিখলেন, ‘নির্যাতকের ভূমিকা পরিহার করুন’। এর মাত্র ৪৮ ঘন্টা আগে ২৪ মার্চ রাত ১১টায় লে. জেনারেল এরশাদ মার্শাল ল’ জারি করেন। রেডিও-টিভিতে আধাঘণ্টা অন্তর তখন প্রচার চলছে- ‘সামরিক বাহিনীর কোনরূপ সমালোচনা দন্ডনীয় আপরাধ।’ সিংহপুরুষ গোলাম মাজেদ তা মানলেন না। অতঃপর তিনি ২৯ মার্চ গ্রেফতার হলেন। স্বৈরশাসক ৮দিন তাঁকে আজ্ঞাত স্থানে রেখে অবর্ণনীয় নির্যাতন চালায় এবং জিঘাংসাবৃত্তি পূরনে প্রহসনমূলক বিচারের নামে তাঁকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়। কিন্তু দেশী-বিদেশী মানবাধিকার সংস্থা ও সাংবাদিকদের চাপের মুখে ১৯৮২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তাঁকে মুক্তি দেয়া হয়।
গোলাম মাজেদ কারাগার থোকে মুক্তি পেয়ে আবারও তেজোদীপ্ত কণ্ঠে গর্জে ওঠেন। এরশাদের পুত্র সন্তান লাভ সংক্রান্ত মিথ্যাচার-সহ কয়েকটি বিষয়ে তিনি কঠোর ভাষায় প্রবন্ধ লেখেন ‘চাদর ও মাজারের মাহাত্ন্য নয়’ শিরোনামে। এর ফলে সামরিক জান্তা ১৯৮৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি আবারো তাঁকে গ্রেফতার করে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করে। সামরিক আদালতে একতরফা বিচারে গোলাম মাজেদকে আবারো ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। নির্মম নির্যাতন চালানো হয় তাঁর ওপর। সাংবাদিক গোলাম মাজেদ তবুও দমলেন না। ‘ইমলী’ ছদ্মনামে কারাগারে বসে লিখে গোপনে প্রতিক্রিয়া পাঠাতে লাগলেন। এর পাশাপাশি সামরিক শাসনের প্রতিবাদে বন্দীবিদ্রোহে’র প্রচেষ্টা নেন। বিষয়টি আগেভাগে জানতে পেরে কর্তৃপক্ষ তাঁকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সিলেট কারাগারে পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
অমানুষিক নির্যাতনের ফলে গোলাম মাজেদের শরীর বেশ ভেঙ্গে পড়ে। অবস্থার চরম অবনতি হয়। অগত্যা এরশাদ সরকার ‘হত্যার দায় এড়াতে’ ১৯৮৪ সালের ৫ এপ্রিল গোলাম মাজেদকে মুক্তি দেয়। ৭ এপ্রিল তিনি সিলেট থেকে ঢাকা হয়ে রাত সাড়ে ৩টায় যশোরে পৌঁছান। সে সময় শারীরিক দিক থেকে তিনি ছিলেন প্রচণ্ড দুর্বল। মাত্র ৫ দিন অতিবাহিত হয়। ১০ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে বুকে প্রচণ্ড যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকেন। শরীরের তাপ ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যেতে থাকলে চিকিৎসকবন্ধু ডা. রবিউল হকের পরামর্শে তাঁকে দ্রুত যশোর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকগণ ৪ ঘণ্টা অক্লান্ত চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচাতে ব্যর্থ হন। বিকাল ৪:৩৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
অকৃতজ্ঞ জাতি ও সাংবাদিক সমাজ সিংহপুরুষ কমরেড গোলাম মাজেদকে বেমালুম ভুলে গেছে! কিন্তু আমি তাঁকে কখনই ভুলবো না। কারণ তিনি আমাকে শিখিয়ে গেছেন আদর্শ, সততা, সাহস এবং আপোসহীনতা কাকে বলে।
© আহমেদ জহুর, কবি, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক