ভারতের মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল-মুসলেমিন (মিম) প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি বলেছেন, অসমের এনআরসি থেকে বিজেপি’র শিক্ষা নেয়া উচিত। তিনি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেন।
অসমে গতকাল এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এতে ১৯ লাখেরও বেশি মানুষের নাম বাদ পড়েছে। গণমাধ্যমের একটি সূত্র বলছে- এনআরসি থেকে বাদ পড়াদের অধিকাংশই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। যদিও হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতারা একসময় লাখ লাখ বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীর কথা বলায় রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিগত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপির অন্যতম প্রধান ইস্যু ছিল ‘বেআইনি অনুপ্রবেশ’।
ব্যারিস্টার আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি বলেন, হিন্দু ও মুসলিমের ভিত্তিতে দেশজুড়ে এনআরসি’র দাবি বন্ধ করা উচিত বিজেপির। ওদের শিক্ষা নেয়া উচিত যে অসমে কী হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিভ্রান্তি ভেঙে গেছে।
তিনি বলেন, আমার সন্দেহ যে- নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের মাধ্যমে বিজেপি এমন একটি বিল আনতে পারে, যাতে সমস্ত অমুসলিমকে নাগরিকত্ব দেয়া যায়। এরফলে সাম্যের অধিকার লঙ্ঘন হবে।
ওয়াইসি বলেন, অসমের অনেক লোক আমাকে বলেছে, বাবা-মায়ের নাম এনআরসি তালিকায় আছে কিন্তু সন্তানদের নাম নেই! মুহাম্মাদ সানাউল্লাহ সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। আশা করি তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।
গত মে মাসে ফরেনার্স ট্রাইবুনালের রায়ে গ্রেফতার হন একসময়ে মনিপুর ও কাশ্মীরে লড়াই করা মুহাম্মাদ সানাউল্লাহ। ১২ দিন তাঁকে আটকে রাখা হয়। পরে গুয়াহাটি হাইকোর্টের রায়ে ছাড়া পান তিনি। মামলাটি নিয়ে আদালতে এখনও লড়াই করছেন তিনি।
গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে সানাউল্লাহ সেসময় বলেন, ‘৩০ বছরের সৈনিক হিসেবে, এটা খুবই দুঃখের। দেশের জন্য কাজ করার পর আমি এটা পেলাম। তবে আমি মনে করি আমার বিষয়টি চোখ খুলে দেবে, বিচার মিলবে। আমি কখনই ভাবিনি যে, আমাকে একজন ‘বিদেশি’ ঘোষণা করা হবে, কারণ আমি একজন প্রকৃত ভারতীয়।’
আদালতে মামলা চলায় বর্তমান এনআরসি তালিকায় সানাউল্লাহর নাম নথিভুক্ত হয়নি। গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমার মামলাটি এখনও হাইকোর্টে বকেয়া রয়েছে, সেজন্য আমি আশা করিনি যে, আমার নাম তালিকায় থাকবে।’ বিচারব্যবস্থার প্রতি তাঁর পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে, সেজন্য তিনি সুবিচার পেতে আত্মবিশ্বাসী বলেও মুহাম্মাদ সানাউল্লাহ মন্তব্য করেন।
পার্সটুডে