অর্থমন্ত্রী ১১ মাসে কী করলেন, প্রশ্ন এফবিসিসিআই সভাপতির
ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা দূর করতে না পারা ও ব্যাংক খাতের পুনর্গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে না পারায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার ওপর ক্ষোভ জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম।
বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনব্যাপী সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ-২০১৯ উদ্ধোধনীতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি এ ক্ষোভ জানান।
অর্থমন্ত্রীর বিষয়ে শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর ১১ মাস পর অর্থমন্ত্রী বললেন, সুদের হার এত বেশি যে, বাংলাদেশে ব্যবসা করা কঠিন। ব্যাংক খাতের পুনর্গঠনে এই ১১ মাস উনি কম করলেন? যখন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাপ আসে তখন তিনি বক্তব্য দিচ্ছেন। এটি দুঃখজনক।
তিনি বলেন, যখন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই উদ্বেগের কথাগুলো উঠে আসছে, তখনই উনি বক্তব্য দিলেন। হয়তো আবার নেক্সট ছয়মাস হাইবারনেশনে চলে যাবেন। এগুলো দুঃখজনক। আমরা মনে করি এই প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটিয়ে উঠতে হলে সম্মিলিতভাবে চ্যালেঞ্জেস গ্রো করতে হবে।
এনবিআরের সহযোগিতার ঘাটতি এবং পেশাগত অযোগ্যতা খুবই দৃশ্যমান উল্লেখ করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। তিনি সিরামিক এক্সপোর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান অনুপুস্থিত থাকায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ আছে। গত দশ বছরে ১৮৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। মাথাপিছু আয় ৩২০ ডলার থেকে ১৯০৯ ডলার হয়েছে। সেখানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভাগ এনবিআর কর্মকর্তাদের সহযোগিতার ঘাটতি ও পেশাগত অযোগ্যতা খুবই দৃশ্যমান। উদাহরণ স্বরুপ তিনি বলেন, সিরামিক শিল্পের জন্য আমদানিকারকদের কাঁচামালের ম্যাটেরিয়ালে থাকা ৩০ শতাংশ ময়েশ্চারেরও ট্যাক্স দিতে হয়। এটা একটা… এ ব্যাপারে আসলে আমার কোনো মন্তব্য নেই। সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি দিতে হয়। এগুলো বসে নতুন লোকাল ইন্ডাস্ট্রিকে প্রটেক্ট করার জন্য। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে নতুন লোকাল ইন্ডাস্ট্রি বাড়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে এসডিটি।
এনবিআরের চেয়ারম্যান এজন্যই এখানে আসেননি। আজকে এখানে উপস্থিত নেই। এটা দুঃখজনক। তবে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের অসম্ভব সম্মান দেন। প্রধানমন্ত্রীর যারা টিম মেম্বার আছেন (পলিটিক্যাল লিডারশিপ, গভর্নমেন্ট লিডারশিপ) উনারাও না চাইলেও সম্মান দিতে হয় প্রধানমন্ত্রীর কারণে। কিন্তু বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট যেভাবে ব্যবসায়ীদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, এটা বাংলাদেশের সামনের দিকে আগানোর বাধা সৃষ্টি করার শামিল বলে আমি মনে করি এফবিসিসিআই থেকে।
সিরামিক উৎপাদনকারীদের উদ্দেশে বলেন, আমি মনে করি আপনাদের যে সমস্যা আছে, তা আরও শক্তভাবে তুলে ধরা উচিত। এফবিসিসিআই আপনাদের সঙ্গে হানড্রেড পারসেন্ট আছে। আমাদের একটি জিনিস লক্ষ্য রাখতে হবে কমপ্লিসেনসিতে ভুগলে হবে না।
উদ্যোক্তারা সিরামিকের মতো বহুমুখী রপ্তানি পণ্য নিয়ে আসলেও এনবিআর অথবা অর্থ মন্ত্রণালয়ে কিছু অবাস্তব বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে এই সেক্টরগুলো যেভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা, সেভাবে যাচ্ছে না। বরং তারা প্রতিবন্ধকতা ফেস করছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১২/১৩ শতাংশ সুদ দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব না। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে রাজস্ব আদায়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও এনবিআরকে কাজ করতে হবে।