বাবরি মসজিদ ভাঙার সাম্প্রদায়িক সংঘাতের ক্ষত বয়ে নিয়ে চলা ভারতের অযোধ্যা শহর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির স্থাপন করতে চলেছে। স্থানীয় হনুমানগিরি মন্দিরের মালিকানাধীন জায়গায় ৩০০ বছর পুরোনো মুঘল আমলের একটি মসজিদ পুন:নির্মাণ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
অযোধ্যার আলমগিরি মসজিদটি স্থানীয় সরকার ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। এরপরেই মসজিদের জমির মালিক হনুমানগিরি মন্দির ট্রাস্ট ঘোষণা করেছে তারা মসজিদটি সংস্কার করে পুনর্নির্মাণের সমস্ত খরচ বহন করবে। শুধু তাই নয়, মসজিদ পুনর্নির্মাণের সময় প্রাঙ্গণে নামাজ পড়তে মুসলিমদের আহ্বান জানিয়েছে মন্দির ট্রাস্ট।
আলমগিরি মসজিদ ১৭ শতকে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের অনুমতি নিয়ে অযোধ্যায় তার এক সেনাপতি নির্মাণ করেন। ১৭৬৫ সালে মসজিদের জমিটি হনুমানগিরি মন্দিরকে দান করেন নবাব সুজাউদ্দৌলা, শর্ত ছিল নামাজ পড়তে বাধা দেয়া যাবে না।
কালানুক্রমে এই মসজিদ জীর্ণশীর্ণ হয়ে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। অযোধ্যা মিউনিসিপ্যাল বোর্ড সম্প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ভবনটিতে প্রবেশ নিষেধ করায় স্থানীয় মুসলিমরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। মুসলিমরা হনুমানগিরি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত মহন্ত জ্ঞান দাসের কাছে গিয়ে মসজিদের সংস্কার করার বিষয়ে অনুমতি চান।
বৈঠক শেষে মন্দির ব্যবস্থাপনা কমিটি মুসলিমদের বিস্মিত করে বলে, তারা শুধু সংস্কারের অনুমতি দেবে না এর সমস্ত ব্যয়ও বহন করবে। মহন্ত জ্ঞান দাস বলেন, আমি আমার মুসলিম ভাইদের বলেছি আমাদের খরচে মসজিদটি সংস্কার করতে এবং মসজিদে নামাজ পড়ার বিষয়ে অনাপত্তিপত্র জারি করি, কারণ এটা ‘খোদার ঘর’. শুধু তাই নয়, মসজিদের সমান বয়সী যে মাজারটি আছে সেটিও সংস্কার করে দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। উল্লেখ্য, মহন্ত জ্ঞান দাস রমজানের সময়ে মুসলিমদের জন্য ইফতারের আয়োজনও করেছিলেন।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া