শিক্ষাশিরোনাম

অবস্থান কর্মসূচীর মাধ্যমে বছর শুরু করলো খুবি শিক্ষার্থীরা

বছরের শুরুতেই বেতন ফি কমানো, আবাসন সংকট নিরসন, পরিক্ষার খাতায় কোডিং পদ্ধতি চালু, মুক্তচিন্তা বিকাশে সহায়ক অধ্যাদেশের ব্যবস্থাকরণ দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী পালন করলেও দুপুরের পর থেকে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে সেখানে অবস্থান নেয় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা বলেন, গত কয়েক বছরে বেতন ফি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন টার্ম রেজিষ্ট্রেশনের পূর্বেই বেতন-ফি সহনীয় মাত্রায় কমানোর দাবি জানান। এসময় রেজিষ্ট্রেশন ফি সহনীয় মাত্রায় না আনা হলে তারা রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবেন না বলেও জানান।
শিক্ষার্থীরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের কথা উল্লেখ করে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেক ছাত্র সংবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ দ্বারা নির্ধারিত স্থানে শর্তাধীনে বসবাস করবে। অথচ মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ৩১.৫৯ শতাংশ আবাসন এর সুযোগ পায়। আবাসন সংকট নিরসনে কত দিনের মধ্যে নতুন হল হবে তা লিখিত আকারে জানানোর পাশাপাশি নতুন হল নির্মাণের আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হোস্টেল ব্যবস্থার দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার খাতা দ্বিতীয় পরীক্ষক দ্বারা মূল্যায়ন এবং প্রয়োজন অনুসারে তৃতীয় পরীক্ষণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পরীক্ষার খাতায় কোডিং পদ্ধতি চালু করার দাবি জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী সকাল ৭ টা হতে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রতিদিন খোলা রাখার দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা। এছাড়া গল্প, উপন্যাস, জার্নাল, একাডেমিক গ্রন্থসহ সব ধরনের বই বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়ে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ২৪ ঘন্টা চিকিৎসক রাখার পাশাপাশি মেডিকেলে প্রয়োজনীয় সকল সরন্জাম কেনার দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য যেসব সুপারিশ প্রদান করা হয়েছে তা দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করা হবে।
সর্বশেষ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবিসহ সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখে সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য শিক্ষকবৃন্দের সমন্বয়ে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির আহবায়ক কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. শেখ মোঃ রজিকুল ইসলাম এবং সদস্য-সচিব ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মোঃ শরীফ হাসান লিমন। কমিটিকে জরুরী ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কমিটির সদস্যবৃন্দরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে তদন্তের বিষয়ে সহযোগীতা চাইতে গেলে শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাক্ষান করে আন্দোলন চালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ই নভেম্বর উল্লিখিত এসব সমস্যা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরপর ২১ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন । পরবর্তীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় তারা এ কর্মসূচীর ডাক দেয়।
নয়া দিগন্ত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button