মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, কেউ অতি উৎসাহী হয়ে, ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছে নিজের বীরত্ব তুলে ধরতে অন্যায়ভাবে নির্দেশের বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন। এ কাজগুলা যারা করেছেন তারা অন্যায়কারী। তিনি যদি পুলিশের কেউ হন, তার বিচার করতে হবে। পুলিশের যদি বিচার না হয় তাহলে আরেক জনের ক্ষেত্রে বিচারও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
আজ রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মানিকগঞ্জে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিমিয়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে সব সদস্য সরাসরি এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল এবং যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ আছে তদন্তের মাধ্যমে বা মামলার মাধ্যমে বা যে কোনো মাধ্যমে হোক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, অবশ্যই তাদের বিচার হতে হবে। অন্যায় অন্যায়ই, কাজেই যে দোষী, তার বিচার হতে হবে।
সারজিস আলম আরো বলেন, ‘এসব কালপ্রিটদের বিচার হতে হবে। কেউ যদি বিচার চাইতে গেলে বিন্দুমাত্র আমাদের এই ভাই-বোনদের কোনো কিছু বলার স্পর্ধা দেখায়, আমরা কঠোরভাবে তাদের বিরুদ্ধে যা ব্যবস্থা নেয়ার সেই ব্যবস্থা নেব।’
সারজিসসহ অপর সমন্বয়করা আন্দোলনে শহীদ শিবালয় উপজেলার রফিকের বাবা মো: রহিজ উদ্দিন, সাটুরিয়ার শহীদ আফিকুল ইসলাম শাদের বাবা মো: শফিকুল ইসলাম, আহত মো: আরমান হোসেন, হাসনা হেনা, সিয়াম মোল্লাসহ আগত আহতদের কথা শোনেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এ সময় আহতরা জানান, হাসপাতালেও তাদের হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছে।
আহতদের একজন বলেন, ‘মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব সাহা তাকে হাসপাতালে গিয়ে হুমকি দিয়েছেন।’
অপর এক আহত জানান, মানিকগঞ্জ সদর থানার এসআই জুয়েল তার মামলা তো নেননি, বরং এখনো তাকে দেখলে নানান ধরনের কথা বলেন।
হামলার স্বীকার আহতরা বলেন, ‘পুলিশের সেই আক্রমণকারী সদস্যরাই বেশিভাগ থানায় বর্তমানে কর্মরত আছে। আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও দেশে স্থিতিশীলতার জন্য তাদের কিছুই বলিনি। তবে আমরা এখন এদের বিচার চাই।’
সারজিস আলমসহ সমন্বয়করা বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে আছি এবং দেশে যেকোনো বিশৃঙ্খলা রোধে আপনাদের সাথে নিয়ে মোকাবেলা করব। আমাদের সবাইকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। যেকোনো যড়ষন্ত্র এদেশের ছাত্র-জনতা রুখে দেবে।’
উল্লেখ্য, সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ ১০ জনের একটি সমন্বয়ক টিম রোববার সকাল ১০টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এসে পৌঁছান। এরপর জেলা-উপজেলা থেকে আগত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা অংশ নেন। দুপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মানিকগঞ্জের শহীদ পরিবার ও আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
কোনো বিরতি না দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, পরে পেশাজীবিদের সাথে এবং সন্ধ্যায় সর্বস্তরের জনগণের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি।