দেশে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ৪০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৪ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরো ৫১৩ জন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। গতকাল রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, গত ডিসেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৭৬ নারী ও ৫১ জন শিশু রয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে জাতীয় মহাসড়কে ১২৪, আঞ্চলিক সড়কে ১২৯, গ্রামীণ সড়কে ১০৪, শহরের সড়কে ৪২ এবং অন্যান্য স্থানে (ফেরিঘাট, নদীর তীর) তিনটি সংঘটিত হয়েছে। মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে ৭৭, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৪৭, পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দিয়ে ১৩১, যানবাহনের পেছনে আঘাত ৩৮ এবং ৯টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।
১৩৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪৭ জন, যা মোট নিহতের ৩১.৬৮ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৪.৩২ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১২৮ পথচারী নিহত হয়েছেন যা মোট নিহতের ২৭.৫৮ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৪ জন। দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে বাসযাত্রী ১৮, ট্রাকযাত্রী ১৩, পিকআপ যাত্রী ১১, লরিযাত্রী ৭, ট্রাক্টরযাত্রী ৫, মাইক্রোবাস যাত্রী ৯, প্রাইভেটকার যাত্রী ৭, সিএনজি যাত্রী ১২, ইজিবাইক-অটোরিকশা যাত্রী ৬০, নসিমন, ভটভটি, মাহিন্দ্র, বোরাক, টেম্পো যাত্রী ২৭, টমটম-ভ্যান ৬, বাইসাইকেল আরোহী ৫, রিকশা ও রিকশাভ্যান যাত্রী ৯ জন।
সংস্থাটির দুর্ঘটনার বিভাগ ভিত্তিক পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১১৭টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩৮ জন। সবচেয়ে কম রংপুর বিভাগে। ২০টি দুর্ঘটনায় নিহত হন ১৮ জন। একক জেলা হিসেবে টাঙ্গাইল জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১৬টি দুর্ঘটনায় ২৯ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম পিরোজপুর জেলায়। দুইটি দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, গত বছরের নভেম্বর মাসের তুলনায় ডিসেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা সামান্য কমলেও প্রাণহানির হার বেড়েছে। সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই যা দুঃখজনক। জাতীয় স্বার্থেই এক্ষেত্রে সরকারকে মনোযোগী হতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনারোধে নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ এবং গণপরিবহন খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা- উভয়ই জরুরি।